তৃণমূলের নামে বন্ধ করা হল শো-রুম

দাবি আদায়ের নামে একটি গাড়ির শো-রুম বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকালে দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গি এলাকায় ওই শো-রুম বন্ধ করে আইএনটিটিইউসি-র পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়। শ’দুয়েক কর্মী সেখানে কাজ করেন, যাঁদের বেশির ভাগ ঠিকাকর্মী। ক্ষুব্ধ শো-রুম কর্তৃপক্ষ ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ নোটিস ঝোলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৪ ০২:৫৮
Share:

ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।

দাবি আদায়ের নামে একটি গাড়ির শো-রুম বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গি এলাকায় ওই শো-রুম বন্ধ করে আইএনটিটিইউসি-র পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়। শ’দুয়েক কর্মী সেখানে কাজ করেন, যাঁদের বেশির ভাগ ঠিকাকর্মী। ক্ষুব্ধ শো-রুম কর্তৃপক্ষ ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ নোটিস ঝোলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

দাবি আদায়ের নামে দুর্গাপুরের নানা শিল্প সংস্থায় আইএনটিটিইউসি-র জঙ্গিপনার অভিযোগ এর আগেও বারবার উঠেছে। বছর দেড়েক আগে এমন আন্দোলনে জেরবার হয়ে জয় বালাজি কর্তৃপক্ষ দুর্গাপুর থেকে কারখানা গুটিয়ে নেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন। দিনভর বিক্ষোভের জেরে পরিষেবা শিকেয় উঠেছিল একটি বেসরকারি হাসপাতালে। এই সব আন্দোলনের নেতৃত্বে যিনি ছিলেন, সেই অসীম প্রামাণিককে গত বছর বহিষ্কার করে আইএনটিটিইউসি। তার পরে বেশ কিছু দিন দুর্গাপুরে শিল্প সংস্থায় অচলাবস্থা তৈরির অভিযোগ বন্ধ ছিল।

Advertisement

আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব অবশ্য দাবি করছেন, ওই শো-রুমে তাঁদের অনুমোদিত কোনও ইউনিট নেই। সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেনের বক্তব্য, “যাঁরা এটা করেছেন, নিজেদের দায়িত্বে করেছেন। দল ও সংগঠনের স্পষ্ট নির্দেশ আছে, শ্রমিক আন্দোলনের নামে কোনও জঙ্গিপনা চলবে না। যে কোনও দাবি শ্রম দফতরের মধ্যস্থতায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে মেটাতে হবে।”

এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ দুর্গাপুর শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ওই শো-রুমের সামনে কিছু আইএনটিটিইউসি কর্মী ঝান্ডা টাঙিয়ে দেন। এর মধ্যে শো-রুমের কিছু কর্মীও ছিলেন। শো-রুম বন্ধ করতে বাধ্য করা হয় বলেও অভিযোগ। শো-রুম বন্ধের পরে কিছু ক্ষণ বাইরে অপেক্ষা করে ফিরে যান কর্মীরা। বীরভূমের দুবরাজপুর থেকে গাড়ি কিনতে এসেছিলেন দেবেশ্বর মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এমনটা হবে জানলে আসতাম না। অহেতুক হয়রান হলাম।”

স্থানীয় আইএনটিটিইউসি নেতা বিমলকুমার ধাড়ার অভিযোগ, “এই শো-রুমে ঠিকাকর্মীরা সময়ে বেতন পান না। ছুটিও পান না। পিএফ, ইএসআই দেওয়া হয় না। কর্মীর সংখ্যা কম, তবু নতুন নিয়োগ হচ্ছে না। এই সব নিয়ে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েও জবাব পাইনি। বাধ্য হয়ে এই ভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।” তাঁর আশ্বাস, কর্তৃপক্ষ তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেই শো-রুম খুলে দেওয়া হবে।

শো-রুম কর্তৃপক্ষের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, স্থানীয় কিছু তৃণমূল নেতা-নেত্রী নিজেদের লোক নিয়োগের জন্য চাপ দিচ্ছেন। সম্প্রতি এক জনের অনুরোধে দুই মহিলাকে নিয়োগও করা হয়েছে। এখন আর এক নেতা বলছেন, তাঁর পছন্দের ২০ জনকে কাজে নিতে হবে। সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, “এখানে এখন আর নতুন নিয়োগ সম্ভব নয়। সে কথা ওঁরা বুঝছেন না।” পিএফ, ইএসআই বা ছুটি না দেওয়ার কথা মানতে চাননি তিনি।

তৃণমূল সূত্রের খবর, শো-রুম বন্ধ করায় যুক্তরা স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা পুরসভার বরো কমিটির চেয়ারম্যান চন্দন সাহার অনুগামী বলে পরিচিত। এই ঘটনায় তাঁর কোনও হাত নেই দাবি করেও চন্দনবাবুর বক্তব্য, “কর্মীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে বহুবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সাড়া দেননি।” শো-রুমটি যে সংস্থার, সেটির জেনারেল ম্যানেজার (এইচআর) অসিতবরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ না করেই শো-রুম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমরাও কাজ বন্ধের নোটিস ঝোলাচ্ছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement