জমে উঠেছে নজরুল মেলা। সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে রবিবার, পয়লা জুন পর্যন্ত। প্রতি দিন সন্ধ্যায় থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। চুরুলিয়া নজরুল অ্যাকাডেমি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের প্রতিটি দিন উৎসর্গ করা হয়েছে বিভিন্ন মনীষীর নামে। সোমবার সকালে মেলার সূচনা করেন নজরুল গবেষক যুধিষ্ঠির পাল। সন্ধ্যায় এসেছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সোমবার ছিল নজরুল দিবস। মন্ত্রী জানান, আগামী বছর থেকে কবিতীর্থ চুরুলিয়ায় সরকারী উদ্যোগে নজরুল জয়ন্তীর আয়োজন করা হবে। মন্ত্রীর এই আশ্বাস শুনে আসানসোলের শিল্পী শক্তি ভট্টাচার্য, কবি কুমারেশ তেওয়ারি, নীতিশ চৌধুরীরা বলেন, “কবির জন্মভিটেকে শান্তিনিকেতনের চেহারা দেওয়া আমাদের অনেক দিনের স্বপ্ন। মন্ত্রীর কথা শুনে আমাদের আশা স্বপ্ন সফল হবে।”
দর্শকদের কাছে এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ হল নানা পদের খাবার ও খুদেদের বিনোদনের জন্য নানা আয়োজন। একই সঙ্গে প্রতি দিনই থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মঞ্চ মাতাচ্ছেন দোমহানি, জামুড়িয়া ও আসানসোলের শিল্পীরা। মেলা কমিটির সম্পাদক মোজাহার হোসেন জানান, ১৯৫৮ সালে চুরুলিয়া নজরুল অ্যাকাডেমির পথ চলা শুরু। এই সংস্থার উদ্যোগে ১৯৭৮ সাল থেকে শুরু হওয়া নজরুল মেলা বর্তমানে বাৎসরিক উৎসবের চেহারা নিয়েছে।
গত ১৫ বছর ধরে নজরুল মেলায় নানান খেলনার পসরা সাজিয়ে বসেন উত্তর ২৪ পরগণার কাঁকিনাড়ার রতন সাহা। বিক্রি নিয়ে খুশি হলেও তাঁর আক্ষেপ, “এখানে দোকানদারদের কাছে জায়গার যে ভাড়া নেওয়া হয় সেটা তুলনায় বেশি। তবুও অদ্ভুত এক নাড়ির টানে এখানে আসে আমি।” একই ভাবে এই মেলায় গত ৫ বছর নাগরদোলা নিয়ে আসছেন বেলঘড়িয়ার রিনা দেব। গত ১০ বছর ধরে আসানসোল থেকে আসছেন খাবার বিক্রেতা শম্ভু সিংহ। তাঁরা জানান, রাতে এই মেলা আরও আকর্ষনীয় হয়ে ওঠে। তাঁদের দাবি, মেলাকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য মেলার সময় সারা রাত বিশেষ বাস পরিষেবা চালু রাখার প্রয়োজন।. সেটা হলে মেলায় মানুষের ঢল আরো বেড়ে যাবে।
আয়োজকরা জানান, মঙ্গলবার ছিল রবীন্দ্র দিবস। আজ, বুধবার, মেলার তৃতীয় দিন হল প্রমীলা দিবস। বৃহস্পতিবার উৎসর্গ করা হয়েছে মান্না দে ও ঋতুপর্ণ ঘোষের নামে। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠান করবে সঙ্গীতশিল্পী কল্যাণ সেন বরাটের সংস্থা ক্যালকাটা কয়ার। শুক্রবার লোকসঙ্গীতশিল্পী পূরবী দত্ত দিবসে থাকছেন বিদ্রোহী কবির নাতনি খিলখিল কাজি। তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে আসছেন ইয়সিন মুস্তারি, ওস্তাদ সালাউদ্দিন আহমেদ ও লীনা তাপসী খান। ষষ্ঠ দিন, শনিবার উৎসর্গ হয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামী নিবারণ ঘটকের নামে। রবিবার, অনুষ্ঠানের শেষ দিন হবে লোক সংস্কৃতি দিবস।