আহত ছাত্রী।—নিজস্ব চিত্র।
খাতা না নিয়ে যাওয়ায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠল ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। শনিবার শহরের কোড়ার রাধাকিশোর উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা।
স্বর্ণালী শ্যাম নামে ওই ছাত্রীর মা সুষমাদেবী পুলিশকে লিখিত অভিযোগে জানান, শনিবার তনুশ্রী সেন নামে ওই শিক্ষিকা লাঠি দিয়ে মেয়েকে মারধর করে। তাতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে স্বর্ণালী। তখন কয়েকজন সহপাঠিকে দিয়ে স্বর্ণালীকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে স্কুল। বর্ধমান থানা একটি জেনারেল ডায়েরি দায়ের করেছে। তবে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বর্ধমান থানার আইসি আব্দুল গফ্ফরের দাবি, “ওই শিক্ষিকা মেয়েটিকে চড় মেরেছিলেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। চড় মারলে কোনও ধারাতেই মামলা দায়ের করা যায় না। কোনও ব্যবস্থাও নেওয়া যায়না। তবে ঘটনাটি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হয়েছে।”
মঙ্গলবার অবশ্য স্কুলে দাঁড়িয়েই তনুশ্রীদেবী বলেন, “ওই ছাত্রীকে মারা উচিত হয়নি। আমারও সন্তান রয়েছে। আমি অনুতপ্ত।” সুষমাদেবীর অবশ্য দাবি, শনিবারই মেয়ের দেহে লাঠির আঘাতের চিহ্ন দেখে স্কুলে যান তিনি। তখন ওই শিক্ষিকা তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এমনকী স্বর্ণালীকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট ধরানো হবে বলেও বলেন ওই শিক্ষিকা।
প্রশ্ন উঠছে খাতায় এমন কী ছিল? সুষমাদেবীর দাবি, মাধ্যমিকের রেজিস্ট্রেশনের জন্য নবম শ্রেণির ছাত্রীদের ফর্ম পূরণের কাজ চলছে। ফর্মে তাঁর নামের বানান নিয়ে গণ্ডগোল হয়। তিনি যে বানান লেখেন মেয়ে সেই বানান লিখতে চাইলে স্কুল থেকে অন্য বানান লিখতে বলা হয়। স্কুলের যুক্তি, নথিতে ওই বানানই লেখা রয়েছে। এরপরে মেয়েকে দিয়ে খাতায় সুষমাদেবীর নামের প্রকৃত বানান লিখিয়ে আনতে বলেন শিক্ষিকারা। সেই বানান লেখা খাতাই নিয়ে যেতে যেতে ভুলে গিয়েছিল স্বর্ণালী। একথা শুনেই ওই শিক্ষিকা তাকে লাঠি দিয়ে মারধর করেন বলে অভিযোগ।
সুষমাদেবী জানান, শনিবার প্রচণ্ড প্রাকৃতিক দুর্যোগ হওয়ায় থানায় যেতে পারেননি তিনি। রবিবার মেয়ের চিকিৎসা করাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতাল থেকেই তাঁকে বলা হয়, ঘটনাটির কথা পুলিশকে জানাতে। এরপরেই ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি।