চলছে কেনাকাটা। নিজস্ব চিত্র।
শীতের আমেজ সঙ্গে নিয়ে তিন দিন পার করল বার্নপুর উত্সব। গণেশ বন্দনা, গিটারের সুর, ভোজপুরী গান, ভাঙরা নাচ, আবৃত্তির মিশেলে রীতিমত জমে গিয়েছে এই উত্সব। হিরাপুর থানা মাঠে গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই উত্সব চলবে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদ ও নাট্য ব্যক্তিত্ব অর্পিতা ঘোষ।
উদ্যোক্তারা জানান, বার্নপুর উত্সবের বয়স এ বার ১১ বছর। আসানসোল পুরসভা ও ইস্কোর সহযোগিতায় এই উত্সব শুরু করেছিল। তখন উত্সব কমিটিতে বাম মনোভাবাপন্ন মানুষের প্রাধান্য ছিল। পরিবর্তনের পর পুরনো কমিটি ভেঙে তৈরি হয় নতুন কমিটি। সেখানে ভিড় বেড়েছে তৃণমূলপন্থীদের। তবে উত্সবের আমেজে ভাটা পড়েনি। এ বার মেলা প্রাঙ্গণে বইয়ের স্টল, হরেক খাবারের পাশাপাশি রয়েছে ফুল ও সব্জির প্রদর্শনী। সেখানে রাখা হয়েছে ৩৫ কেজির লাউ ও ১৫ কেজির কুমড়ো। শুধু বার্নপুর শহর নয়, কালাঝরিয়া, রামবাঁধ, শ্যামবাঁধ, ডিহিকা, পুরুষোত্তমপুর, হিরাপুরের বাসিন্দারাও যোগ দিয়েছেন উত্সবের আনন্দে। উত্সবের মাঠে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি থাকছে চোখে পড়ার মত। মেলায় ঘুরতে এসেছিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী চৈতী দুবে, শিল্পী দে, তৃতীয় বর্ষের নুরআশা খাতুন। তাদের কথায়, “বার্নপুর উত্সব মানে একই সঙ্গে বইমেলা, খাদ্যমেলা এবং আকর্ষণীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।”
শনিবার উত্সবের সূচনা হয় খুদেদের অনুষ্ঠান দিয়ে। তার পর গণেশ বন্দনা পরিবেশন করেন পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী। নৃত্য পরিবেশন করে আসানসোল ড্যান্স অ্যাকাডেমির ছাত্রছাত্রীরা। রবিবার হয় গান, গিটার ও আসানসোল ব্রেল অ্যাকাদেমির অনুষ্ঠান। সোমবার ছিল ভোজপুরী গান ও ভাঙরা নাচের আসর ও আবৃত্তি অনুষ্ঠান। মঙ্গলবারও ছিল জমজমাট গানের অনুষ্ঠান। এর পর অবশিষ্ট দিনগুলিতে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে খরাজ মুখোপাধ্যায় ও রূপঙ্করের গান। থাকছে কাওয়ালি গান, লোকগীতি, নাচ ও যাত্রা। অনুষ্ঠান মঞ্চে কলকাতার নামী শিল্পীদের সঙ্গেই দাপিয়ে অনুষ্ঠান করছেন স্থানীয় শিল্পীরা। সুরছন্দম, সামডি বিবেকানন্দ আশ্রম, সুরমল্লারের মত বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংস্থা, হিরাপুর মানিকচাঁদ ঠাকুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়-সহ সরকারি ও বেসরকারি কয়েকটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা বার্নপুর উত্সব মঞ্চে অনুষ্ঠান করছেন।
সাধারণ মানুষের সাড়া পেয়ে খুশি উত্সব কমিটির সম্পাদক প্রবোধ রায়। তিনি বলেন, “জনপ্রিয় এই উত্সবের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পেরে আমরা খুশি। বার্নপুর উত্সব যেন শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে কলকাতার সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের অন্যতম মাধ্যম।”