এই পুকুর নিয়েই উঠেছে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
একশো দিনের কাজে পুকুর সংস্কারের নামে তছরুপের অভিযোগ উঠল পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে কাঁকসা থানার গোপালপুর পঞ্চায়েতের বাঁন্দড়া গ্রামে। সেখানকার বাসিন্দা তথা ওই পুকুরের মালিকেরা কাঁকসার ব্লক প্রশাসন এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার (বিএলএলআর) দফতরের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ব্লক অফিস এবং বিএলএলআর দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বাঁন্দড়া গ্রামের বাসিন্দা বিজয়কুমার কেশের দাবি, তৃণমূল পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতের তরফে একশো দিনের কাজে তাঁদের পুকুরটি সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু, সেই পুকুরের কোনও সংস্কার হয়নি। এমনকী, এ বিষয়ে তাঁদের কাছে কোনও অনুমোদনও চাওয়া হয়নি। অথচ, সেই পুকুরের সংস্কারের টাকা নেওয়া হয়েছে। বিজয়বাবু অভিযোগ করেন, তাঁদের এই পুকুরটি সংস্কারের নামে বহু সরকারি অর্থ ব্যয় হয়েছে। কিন্তু তাঁদের পুকুর সংস্কার হয়নি। পুকুরের আর এক মালিক অভয়কুমার কেশ অভিযোগ করেন, তাঁদের পুকুর সংস্কারের জন্য অনুমোদিত টাকায় ওই মৌজায় ব্যক্তি মালিকানাধীন চাষযোগ্য জমির চরিত্র বদল করে নতুন পুকুর খনন করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। ওই পুকুর খনন করতে গিয়ে তাঁদের জমিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে তাঁর দাবি। এ বিষয়ে তিনি কাঁকসা ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাছে একটি অভিযোগ করেছেন। সেখানে তাঁর অভিযোগ, পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ কার্যত গায়ের জোরে এ কাজ করছে।
বিজয়বাবু অভিযোগ করেন, প্রথমে তাঁদের পুকুরের নাম করে কাজের বিবরণ দিয়ে একটি বোর্ড লাগানো হয়েছিল। পঞ্চায়েতের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বোর্ডটি তাঁদের পুকুর থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। এখন যেখানে পুকুর খননের কাজ চলছে, সেখানে বোর্ডটি লাগানো হয়। বিজয়বাবুর অভিযোগ, “একশো দিনের কাজ নিয়ে প্রচুর টাকা তছরুপ হচ্ছে। এই ঘটনাই তার প্রমাণ। আমি ব্লক প্রশাসন এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাছে এ বিষয়ে উপযুক্ত তদন্তের দাবি জানিয়েছি।” কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রশাসন উপযুক্ত তদন্ত করলে সত্যি বেরিয়ে আসবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রশাসন দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।” গোপালপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান অপর্ণা ঢালির অবশ্য দাবি, “ওই পুকুর মালিকেরা আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন, নতুন পুকুর খননের জন্য তাঁদের জমিতে চাষবাসের সমস্যা হচ্ছে। আমরা তা খতিয়ে দেখব। তবে অন্য যে সব অভিযোগ ওঁরা করছেন, তা ভিত্তিহীন।”
কাঁকসার বিডিও রাখি বিশ্বাস বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থলে তদন্তকারী দল পাঠানো হয়েছে।” কাঁকসা ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক নিজাম আলি মুফতি জানান, জমির চরিত্র বদলের কোনও আবেদনপত্র তাঁরা পাননি। তিনি বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টির পূর্ণ তদন্ত হবে।” তিনি জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছেও অভিযোগটি পাঠানো হয়েছে।