বাড়ির মালিকদের সঙ্গে কথা বলছেন মহকুমাশাসক। —নিজস্ব চিত্র।
বেশ কয়েক বছর ধরে প্রকল্পটি হবে কি না তা নিয়ে টালবাহানা চলছিল। তারমধ্যেই প্রকল্প এলাকার ভিতর বেশ কয়েকটি বাড়ি গজিয়ে ওঠে। বর্তমানে অধিগৃহীত এলাকায় তারকাঁটার বেড়া দেওয়ার কাজ ওই বাড়িগুলির জন্য আটকে গিয়েছে বলে জানায় এনটিপিসি। বৃহস্পতিবার সকালে কাটোয়ার কোশীগ্রামের দাসপাড়ায় গিয়ে কাটোয়ার মহকুমাশাসক মৃদুল হালদার আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে বাড়ির মালিকদের অন্য জায়গায় স্থানান্তর হতে নির্দেশ দিয়েছেন।
ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বাম জমানায় অধিগৃহীত ৫৫৬ একর জমির মধ্যে রয়েছে কোশীগ্রামের দাস পাড়ার ঝাঙলাই পুকুর পাড়। ওই এলাকা ২০১০-১১ আর্থিক বর্ষে অধিগ্রহণ করে বর্ধমান জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই পুকুরপাড়ের অধীগৃহীত এলাকার মধ্যে সাতটি বাড়ি রয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি বাড়ি নতুন তৈরি করা হয়েছে। ইন্দিরা আবাসন যোজনা প্রকল্পেও একটি বাড়িও তৈরি হচ্ছে। এ দিন ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এনটিপিসি অধিগৃহীত জায়গা সীমানা নির্ধারণ করে খুঁটি পুঁতে রেখেছে। কিন্তু কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে জায়গা ঘিরতে পারেনি। এ অবস্থায় কয়েকদিন আগে বিস্তারিত ভাবে মহকুমাশাসক মৃদুল হালদারকে বিষয়টি জানান এনটিপিসির কাটোয়া প্রকল্পের কর্তারা। এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ এনটিপিসির কর্তাদের নিয়ে কোশীগ্রামের দাসপাড়ায় যান মহকুমাশাসক। সেখানে গিয়ে অধিগৃহীত এলাকার মধ্যে থাকা বাড়ির মালিকদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। মহকুমাশাসক সাফ বলেন, আগামী ২০ দিনের মধ্যে অন্য জায়গায় চলে যেতে হবে তাঁদের। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই সব জমির মালিকেরা ইতিমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ দফতর থেকে জমির ক্ষতিপূরণ নিয়ে নিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, ইন্দিরা আবাসন যোজনার ঘর পেয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দা বিমল দাস। প্রকল্প এলাকার মধ্যেই ঘর বানিয়েছেন তিনি। বিমলবাবুর দাবি, “২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমি ওই জায়গা কিনেছি। এই জায়গা তাপবিদ্যুৎ এলাকায় পড়ছে জানা ছিল না।” গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ইন্দিরা আবাস যোজনার টাকা পেয়েছেন তিনি। প্রশ্ন উঠেছে, প্রকল্প এলাকার মধ্যে ঘর তৈরি করার অনুমোদন দিল কেন প্রশাসন? কাটোয়ার অন্যতম ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ইন্দিরা আবাস যোজনার ক্ষেত্রে জমির দলিল দেখেই ঘর তৈরির টাকা দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দা দয়ালহরি সাহা বলেন, “প্রশাসনের কাছে আমাদের আবেদন, মানবিক দিক দিয়ে বিষয়টি বিচার করা দরকার।”