অভাবের সংসারেও উচ্চ শিক্ষার স্বপ্নে বিভোর দুই মেয়ে

উচ্চ মাধ্যমিকে সাফ্যল্যের পর, শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কাঁকসার প্রত্যন্ত গ্রাম আমলাজোড়ায় সুস্মিতা মণ্ডল। কিন্তু সেই স্বপ্নে বাধ সেধেছে সুস্মিতার পরিবারের অভাব। ঠিক যেমন চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের বালিজুড়ি গ্রামের মল্লিকা মুখোপাধ্যায়ের। মল্লিকার বাবা একটি সাইকেল স্ট্যান্ড চালান। মেয়ের সাফল্যের এই সময়েও উচ্চশিক্ষার খরচ কিভাবে জুটবে, জানেন না তিনি।

Advertisement

অর্পিতা মজুমদার

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৪ ০১:১৫
Share:

উচ্চ মাধ্যমিকে সাফ্যল্যের পর, শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কাঁকসার প্রত্যন্ত গ্রাম আমলাজোড়ায় সুস্মিতা মণ্ডল। কিন্তু সেই স্বপ্নে বাধ সেধেছে সুস্মিতার পরিবারের অভাব। ঠিক যেমন চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের বালিজুড়ি গ্রামের মল্লিকা মুখোপাধ্যায়ের। মল্লিকার বাবা একটি সাইকেল স্ট্যান্ড চালান। মেয়ের সাফল্যের এই সময়েও উচ্চশিক্ষার খরচ কিভাবে জুটবে, জানেন না তিনি।

Advertisement

আমলাজোড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কলা বিভাগের পড়ুয়া সুস্মিতা এবার উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৩২ নম্বর পেয়েছে। দুর্গাপুর মহকুমায় আর কোনও ছাত্রী এত নম্বর পায়নি। বাংলায় ৮৪, ইংরাজি ৭৫, ভুগোল ৯৬, এডুকেশন ৯৪ ও ইতিহাসে ৮৩ পেয়েছে সে। ভুগোল নিয়ে উচ্চ শিক্ষা নিতে চেয়েও তাঁর ভাগচাষি বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে সে চিন্তিত। বাবা ভাগ চাষি মদন মণ্ডলের সামান্য আয়ে কোনও রকমে দু’বেলা দু’মুঠো আহার জোটে। মা মীরাদেবী গৃহবধূ। অর্থের অভাবে পড়াশোনা থমকে গিয়েছিল দাদারও। থেকে থেকেই সে কথাই মনে পড়ছে তাঁর। তাঁর আশঙ্কা, “নিজের ভাগ্যেও এমন হবে না তো?”

পরীক্ষার ফল বেরোনোর পর থেকে সে কথাই ভেবে চলেছে সুস্মিতা। বলেন, “আমি উচ্চশিক্ষা শেষ করে শিক্ষিকা হতে চাই। কিন্তু পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি খুব খারাপ। জানি না, আমার স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত সফল হবে কি না!” স্বপ্ন পূরণের জন্য অন্যের কাছে সহযোগিতা চাইতেও দ্বিধা নেই তাঁর, বলছিলেন সে কথাও।

Advertisement

অন্যের সাহায্য নিয়ে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে দ্বিধা নেই যেমন মল্লিকার। এবার উচ্চ মাধ্যমিকে সে ৩৫২ পেয়েছে। বাংলায় ৬৫, ইংরাজি ৫৩, ভুগোল ৮৬, দর্শন ৮০ ও সংস্কৃতে ৬৮ নম্বর পেয়েছে সে। বাবা দিলীপ মুখোপাধ্যায় আরও তিন জনের সঙ্গে মিলে একটি ছোট সাইকেল স্ট্যান্ড চালান। দিলীপবাবু জানিয়েছেন, মাসে সাকুল্যে আয় হয় হাজার দুয়েক। খনি এলাকায় সেই সামান্য টাকায় তিনজনের সংসার খরচ চালাতে নুন আনতে পান্তা ফুরনোর দশা। তিনি জানান, এতদিন মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাতে অনেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এখন অন্যের সাহায্য ছাড়া মেয়ের উচ্চ শিক্ষা অসম্ভব। মল্লিকা বলেন, “আমার স্বপ্ন পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া। কেউ হাত বাড়িয়ে দিলে, কৃতজ্ঞ থাকব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement