সমর চক্রবর্তী।
মন্দারমনির সমুদ্রে স্নান করতে নেমে তলিয়ে মৃত্যু হল দুই পর্যটকের। নিখোঁজ আরও এক পর্যটক। মৃত ও নিখোঁজ ব্যক্তিরা প্রত্যেকেই বর্ধমানের দুর্গাপুরের বাসিন্দা। ঢেউয়ের ধাক্কায় জখম আরও তিন পর্যটকের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতেরা হলেন সমর চক্রবর্তী (৩৯) এবং কৌশিক মণ্ডল (২৯)। নিখোঁজ বছর বাইশের ঋত্বিক বড়াই। দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের এসএন বসু রোডের বাসিন্দা ছিলেন সমর। ভিড়িঙ্গি ধর্মরাজতলায় থাকতেন কৌশিক। এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ ঋত্বিকের বাড়ি বেনাচিতি কাইজার লেনে। সমর ও কৌশিক, দু’জনই বেসরকারি সংস্থার কর্মী ছিলেন। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন মন্দারমনি রওনা হন।
বর্ধমান ও দুর্গাপুর থেকে ছ'জনের পর্যটক দলটি সোমবার মন্দারমনি যায়। তাঁরা একটি বেসরকারি হোটেলে উঠেছিলেন। মৃত সমর এবং কৌশিকের এক বন্ধুর কথায়, ‘‘এ দিন সকালে হোটেল থেকে বেরিয়ে সমুদ্রের পাড়ে বসেছিলাম। হঠাৎ দেখি, কৌশিক সমুদ্রে তলিয়ে যাচ্ছে। ওকে বাঁচাতে গিয়ে আমিও তলিয়ে যাচ্ছিলাম। মনে হচ্ছিল, ওখানে চোরাবালির স্রোত রয়েছে। পরে বাকি বন্ধুরা আমাদের বাঁচাতে ছুটে যায়। কিছু ক্ষণের মধ্যে
কৌশিক আর সমরকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।"
স্থানীয় এক বাসিন্দা মোটরবাইকে চেপে যাওয়ার পথে ঘটনা দেখতে পেয়ে পর্যটকদের উদ্ধার করতে ছুটে যান। ততক্ষণে ঋত্বিক সমুদ্রের অনেকটা গভীরে চলে গিয়েছিলেন। খবর পেয়ে মন্দারমনি উপকূল থানার পুলিশ এবং নুলিয়ারা সেখানে যান। তাঁরা স্পিডবোট নিয়ে উদ্ধার কাজে নামেন। কিছুক্ষণ বাদে সমর এবং কৌশিকের দেহ উদ্ধার হয়। কিন্তু ঋত্বিকের হদিশ পাওয়া যায়নি।
বাকি তিন পর্যটককে উদ্ধার করে বালিসাই বড় রঙ্কুয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। এর
আগে গত ৩০ জুন দিঘায় সমুদ্র স্নান করতে নেমে তলিয়ে মৃত্যু হয়েছিল হুগলির এক বাসিন্দার। তার আগে গত ১৪ জুন ওল্ড দিঘার জগন্নাথ ঘাটে এবং ১৬ জুন মন্দারমনিতে সমুদ্রে তলিয়ে মৃত্যু হয়েছিল ২ জনের। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট (ড্রাগ এন্ড থেরাপিউটিক) আবুনুর হোসেন বলেন, ‘‘উপকূল থানার পক্ষ থেকে নিয়মিত পর্যটকদের সমুদ্র স্নানের ব্যাপারে সচেতন করা হয়। মাইকিং চলে। নুলিয়া এবং পুলিশি নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।’’