ধৃত জয় পণ্ডিত। —নিজস্ব চিত্র।
নাবালিকাকে অপহরণের পর বিয়ে করে সহবাসের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল ভাতার থানার পুলিশ। যদিও পরিবারের এই অভিযোগকে মানতে নারাজ খোদ নাবালিকা। তাঁর পাল্টা দাবি, ওই যুবক তাঁর প্রেমিক। এবং প্রেমিকের কথা মেনেই স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছিলেন তিনি। তার পর তাঁরা বিয়ে এবং সহবাস করেছেন। পুলিশের কাছে এই বয়ান দেওয়ার পর ওই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ-সহ পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার ভোরে পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার বেগুটের বাসিন্দা জয় পণ্ডিতকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবারই তাঁকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে তোলা হয়। ধৃতকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে সোমবার তাঁকে পকসো আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই নাবালিকার বাড়ি ভাতার থানার নতুনগ্রামে। গত ১৬ মে দুপুরে টিউশন পড়তে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বার হয় সে। তার পর থেকে হদিস মিলছিল না নাবালিকার।
পরিবারের দাবি, বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিয়ে জানা যায যে জয় পণ্ডিত নামে এক যুবক তাঁদের মেয়েকে অপহরণ করে নিজের বাড়িতে আটকে রেখেছেন। এর পরই ভাতার থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেন নাবালিকার বাবা। ওই অভিযোগের ভিত্তি অপহরণের মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ২৪ মে জয়ের বাবা নারায়ণ পণ্ডিতকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এর পর ওই নাবালিকা এবং প্রধান অভিযুক্ত জয়ের হদিস পেতে নারায়ণকে আদালতে তুলে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। ২৮ মে জয়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় নাবালিকাকে। পরের দিন সিজেএম আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নাবালিকার গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করা হয়।
ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিজের বয়ানে নাবালিকার দাবি, তার সঙ্গে জয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। জয়ের পরামর্শেই সে বাড়ি ছেড়ে তাঁর বাড়িতে চলে যায়। সেখানে বিয়ের পর সহবাস করে তারা।
তবে নাবালিকার বয়ানের ভিত্তিতে এই মামলায় ধর্ষণ এবং পকসো আইনের ৪ ধারা-সহ বাল্যবিবাহ নিরোধক আইনের ধারা যুক্ত করার আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। সেই আবেদন মঞ্জুর করে আদালত। পরবর্তীকালে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেন্সিক স্টেট মেডিসিন বিভাগে নাবালিকার মেডিক্যাল পরীক্ষা করায় পুলিশ।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।