বিক্ষোভ বেসরকারি হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র
একই নামের দুই রোগী ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। এক জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু তার পরে দ্বিতীয় জনকে ভুল করে প্রথম জনের গ্রুপের রক্ত দেওয়ার ফলে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, অভিযোগ করল পরিবার। কাঁকসার মলানদিঘির বেসরকারি হাসপাতালে শনিবার বিক্ষোভ দেখান মৃতের পরিজনেরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পথ দুর্ঘটনায় মাথায় গুরুতর চোট নিয়ে ১১ এপ্রিল ওই হাসপাতালে ভর্তি হন গৌরবাজারের বাসিন্দা কৃষ্ণা চক্রবর্তী (৩৮)। রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। ১২ এপ্রিল নিউরো সার্জারি করেন চিকিৎসক লিঙ্গরাজ ত্রিপাঠী। তাঁর রক্তের গ্রুপ ছিল বি-পজিটিভ। ২০ এপ্রিল পর্যন্ত বেশ কয়েক বার তাঁকে রক্ত দিতে হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, রোগীর পরিজনেরাই সেই রক্ত দিয়েছিলেন। ২০ এপ্রিল গভীর রাতে মৃত্যু হয় কৃষ্ণাদেবীর।
১২ এপ্রিল হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগে ভর্তি হন কৃষ্ণা চক্রবর্তী নামে বছর বিয়াল্লিশের আর এক মহিলা। অস্ত্রোপচারের পরে ১৫ এপ্রিল তিনি হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে যান। তাঁর রক্তের গ্রুপ এ-পজিটিভ। এ দিন মৃত কৃষ্ণাদেবীর পরিজনেরা অভিযোগ করেন, বি-পজিটিভ গ্রুপের বদলে এ-পজিটিভ রক্ত দেওয়ায় মৃত্যু হয়েছে রোগীণির। গৌরবাজারের বাসিন্দা দামোদর দত্তের অভিযোগ, ‘‘একই নামের অন্য রোগীর ব্লাড গ্রুপ সংক্রান্ত কাগজ কৃষ্ণাদেবীর মেডিক্যাল ফাইলে ঢুকে যায়। তার জেরেই ভুল রক্ত দেওয়ায় তিনি মারা যান। হাসপাতালের ভুলে এমনটা ঘটেছে। স্বাস্থ্যভবনে অভিযোগ করা হবে।’’
এ দিন হাসপাতালের গেটে বসে বিক্ষোভ দেখান কৃষ্ণাদেবীর পরিজনেরা। তাঁরা দাবি করেন, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে শাস্তি না দেওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের বিরুদ্ধে ভাঙচুরের মিথ্যা অভিযোগ এনেছে বলেও দাবি করেন তাঁরা। খবর পেয়ে কাঁকসা থানা থেকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার বোনাপার্ট চৌধুরী বলেন, ‘‘ঠিক গ্রুপের রক্তই দেওয়া হয়েছে রোগীকে। রোগীর পরিজনেরাই রক্ত দিয়েছিলেন। ভুল অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’ মৃত্যুর কারণ নিয়ে মেডিক্যাল সুপারের বক্তব্য, ‘‘প্রকৃত কারণ ময়না-তদন্তের পরেই জানা যাবে। মাথায় গভীর চোট নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর মৃত্যুর একাধিক কারণ থাকতে পারে। পুলিশ তদন্ত করুক। হাসপাতালের তরফে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’’