শোষক পোকার আক্রমণে নষ্ট হচ্ছে ধান। নিজস্ব চিত্র।
ধান পাকার আগেই শুকিয়ে যাচ্ছে শিষ। বাদামি শোষক পোকার আক্রমণে কার্যত দিশেহারা পূর্ব বর্ধমানের চাষিরা। এমনিতেই কালীপুজের পর বৃষ্টির জেরে জমিতে জল জমায় ধান কাটা পিছিয়ে গিয়েছে। তার উপর পোকার আক্রমণ নতুন করে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চাষিদের। তাঁদের দাবি, বাজার থেকে নামীদামি কীটনাশক এনে প্রয়োগ করেও কোনও সুরাহা মিলছে না।
চাষিরা জানিয়েছেন, সাধারণত আমন ধানের জমিতে শোষক পোকার আক্রমণ হয়েই থাকে। কিন্তু ধান পাকার পর পোকার আক্রমণের ঘটনা আগে কখনও হয়নি। কিন্তু এ বছরে এই ঘটনায় ধানের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ধান পাকার আগেই শুকিয়ে যাচ্ছে শিষ। ফলে আমন ধানের ফলন ব্যাপক মার খাওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
আউশগ্রামের বাসিন্দা তাপস মণ্ডল বলেন, “আমন চাষ করতে বিঘে প্রতি খরচ হয়েছে গড়ে ১২ হাজার টাকা। এটা স্বর্ণ প্রজাতির ধানের ক্ষেত। তবে তুলনায় কম খরচ হয়েছে খাস ধানের চাষে। কিন্তু পোকার আক্রমণে যা অবস্থা উৎপাদন কমে যাবে একেবারে। ফলে লাভ তো দূরের কথা আসল খরচই উঠবে না।” জেলার রায়না থেকে খণ্ডঘোষ, কিংবা গলসি থেকে আউশগ্রাম সর্বত্র একই ছবি।
রায়নার বাসিন্দা কৃষ্ণ ঘোষ জানান যেখানে স্বর্ণ প্রজাতির ধান হত বিঘে প্রতি ১০-১২ বস্তা। সেখানে এখন বিঘেতে চার বস্তা হবে কি না সন্দেহ। একই অবস্থা খাস ধানের। এমনিতেই খাসের ফলন স্বর্ণ প্রজাতির ধানের তুলনায় কম। সেখানেই পোকার আক্রমণে ধানের ফলন কমে অর্ধেক হয়ে যাবে।
এ বছর জেলায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে বলে জানান জেলা সহ-কৃষি আধিকারিক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। এই অবস্থায় চাষিদের দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। জগন্নাথ বলেন, “ধান কেটে নিতে হবে দ্রুত। এখন ধান পেকে গিয়েছে কীটনাশক প্রয়োগ করা ঠিক হবে না।”