দুর্ঘটনায় মৃত কর্মী, বিক্ষোভ কারখানায়

ঘটনার পরেই কাজ বন্ধ রেখে কারখানার দরজা আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন অন্য কর্মীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৪২
Share:

দুর্ঘটনার পরে বন্ধ কারখানার গেট। নিজস্ব চিত্র

কারখানায় ক্রেন ভেঙে পড়ায় মৃত্যু হল এক কর্মীর। আহত হলেন দু’জন। বৃহস্পতিবার সকালে পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার ইকড়া শিল্পতালুকে এই ঘটনার পরে কারখানার গেট আটকে রেখে ঘণ্টা পাঁচেক বিক্ষোভ দেখান সহকর্মী ও পরিজনেরা। কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ কারখানায় ক্রেনের সাহায্যে যন্ত্রপাতি নিয়ে যাওয়ার সময়ে ক্রেনটি ভেঙে পড়ে। তাতে ক্রেন অপারেটর শঙ্কর পাসোয়ান (৩২) এবং দুই কর্মী লালচাঁদ চৌহান ও সত্যেন্দ্র দাস চাপা পড়েন। রানিগঞ্জের জেকেনগরের বাসিন্দা শঙ্করবাবুকে আসানসোল হাসপাতালে নিয়ে গেলে ‘মৃত’ ঘোষণা করা হয়। অন্য দু’জনকে রানিগঞ্জের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁরা উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা।

ঘটনার পরেই কাজ বন্ধ রেখে কারখানার দরজা আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন অন্য কর্মীরা। যোগ দেন মৃতের পরিজন ও প্রতিবেশীরা। তাঁদের দাবি, জখম কর্মীদের চিকিৎসার খরচ, মৃতের পরিবারকে ১২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ, দেহ সৎকারের জন্য ৩০ হাজার টাকা ও পরিবারের এক জনকে চাকরিতে নিয়োগ করতে হবে। কর্মীদের অনেকে অভিযোগ করেন, কারখানায় শ্রমিক-নিরাপত্তা উপেক্ষিত। সুরক্ষাজনিত টুপি, জুতো ঠিক সময়ে সরবরাহ করা হয় না। বছর চারেক আগে এই কারখানায় বয়লার ফেটে এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছিল।

Advertisement

সিটু নেতা মনোজ দত্ত, আইএনটিটিইউসি নেতা সাধন রায়েরা অভিযোগ করেন, এই শিল্পতালুকে ১২টি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা আছে। কোথাও শ্রমিক-সুরক্ষার দিকে নজর দেওয়া হয় না। ২০১০ সালে একটি কারখানায় বয়লার ফেটে যাওয়ায় আট কর্মীর মৃত্যু হয়। ২০০৫ সালে ও চলতি বছরে দু’টি পৃথক কারখানায় কনভেয়র বেল্টের হাত ঢুকে যাওয়ার জেরে দু’জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ২০০৭ সালে একটি কারখানায় নির্মাণকাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক কর্মী, গত বছর একটি কারখানার বর্জ্য ফেলার চৌবাচ্চায় ডুবে এক কর্মী ও এ বছরে ক্রেনের ‘ম্যাগনেট’ ছিঁড়ে পড়ায় একটি কারখানার এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। শ্রমিক নেতাদের দাবি, উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই পরপর দুর্ঘটনা ঘটছে।

এ দিন দুর্ঘটনার পরে ওই কারখানার আধিকারিক দিলীপ আগরওয়াল বলেন, “সকালে ক্রেনের নীচে বেশি লোক ছিলেন না। তা না হলে আরও প্রাণহানি ঘটতে পারত। কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবি আলোচনার মাধ্যমে মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement