মহিলাকে নির্যাতন করে খুনের নালিশ

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলে, মেয়ে ও পুত্রবধূকে নিয়ে দুর্গাপুরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকায় থাকতেন মহিলা। রবিবার রাতে ঘরে একাই ছিলেন। সে দিন দুপুরে পরিবারের বাকিরা দুর্গাপুরের বাইরে একটি বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৯ ০০:০১
Share:

রাতে বাড়িতে একাই ছিলেন মূক-বধির মহিলা। সকালে ঘর থেকে উদ্ধার হল তাঁর মৃতদেহ। দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের কাশীরাম দাস বস্তি এলাকায় বছর আটচল্লিশের ওই মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের। ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তদন্ত চলছে।’’

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলে, মেয়ে ও পুত্রবধূকে নিয়ে দুর্গাপুরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকায় থাকতেন মহিলা। রবিবার রাতে ঘরে একাই ছিলেন। সে দিন দুপুরে পরিবারের বাকিরা দুর্গাপুরের বাইরে একটি বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। তাঁর ছেলে জানান, সোমবার সকালে তিনি বাড়ি ফিরে দেখেন, ঘরের দরজা খোলা। ভিতরে খাটের উপরে মায়ের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। শরীরে জামাকাপড় নেই। বিছানায় ধস্তাধস্তির চিহ্ন রয়েছে। তাঁর দাবি, মায়ের নাক-মুখে রক্তের দাগ ছিল। মুখ ফোলা। বারান্দায় ও ঘরের চালের টালি খোলা ছিল।

পুলিশে খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছন এসিপি (পূর্ব) আরিশ বিলাল। পুলিশের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, নানা কারণে রাতবিরেতে পরিবারের মহিলাদের অনেককেই বাড়িতে একা থাকতে হয়। কিন্তু বস্তির ভিতরে এমন ঘটনা ঘটলে নিরাপত্তা কোথায়, প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের খুঁজে বার করে শাস্তির দাবিও জানানো হয়। পুলিশ জানায়, প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, দুষ্কৃতী চালের টালি সরিয়ে ঘরে ঢোকে। তবে দুষ্কৃতী এক জন ছিল না বেশি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় কারও জড়িত থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।

Advertisement

নিহত মহিলার মেয়ে বলেন, ‘‘আমরা বিয়েবাড়ি গিয়েছিলাম। সকালে দাদা এসে দেখে এই ঘটনা। চারদিকে ঘর-বাড়ি রয়েছে। তার মাঝে থেকেও মায়ের এত বড় বিপদ ঘটে গেল!’’ স্থানীয় বাসিন্দা বাদল বাদ্যকরের দাবি, ‘‘একাধিক দুষ্কৃতী ছিল বলে মনে হয়। মহিলা শক্তপোক্ত ছিলেন। তাঁকে এক জনের পক্ষে সহজে ধরাশায়ী করা মুশকিল। তিনি হয়তো দুষ্কৃতীদের কাউকে চিনতে পেরেছিলেন। তাই তাঁকে প্রথমে মারধর করার পরে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে।’’ এলাকার বাসিন্দা সোনু বাউড়ি, রুমা বাদ্যকরদের বক্তব্য, ‘‘প্রথমে দুষ্কৃতীরা বোধহয় বারান্দার চালের টালি খোলে। সেখানে কেউ নেই দেখে ঘরের চালের টালি খুলে ভিতরে ঢুকেছিল মনে হচ্ছে। আশপাশে বাড়ি থাকলেও কেউ কিছু টের পাননি। দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।’’

প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় মহিলার দেহ উদ্ধার হওয়ায় তাঁকে ধর্ষণ করা হয়ে থাকতে পারে বলেও অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশের। অনেকে আবার মনে করছেন, ধস্তাধস্তির সময়ে কাপড় খুলে গিয়ে থাকতে পারে। বাসিন্দাদের দাবি, এই বস্তিতে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। অনেকেই নানা কাজে বাইরে থাকেন। বাড়িতে মহিলারা থাকেন। এমন ঘটনায় নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বলে জানান তাঁরা।

পুলিশ জানায়, দেহ দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্ট পেলে কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে বোঝা যাবে বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন। দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement