কুকুরকে পুড়িয়ে ‘খুনে’ ধৃত মহিলা

গত ফেব্রুয়ারিতেও বর্ধমান শহরের বড়নীলপুরের শান্তিপাড়ায় এক পরিবারের দু’জনের বিরুদ্ধে কুকুর ছানাকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল। জখম অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায় কুকুরটিকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৯ ০১:০৫
Share:

—ফাইল চিত্র

গর্ভবতী কুকুর ও তার তিন সদ্যোজাত শাবককে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ডিএসপি (‌হেড কোয়ার্টার) শৌভিক পাত্র বলেন, “এই ঘটনা নৃশংস ও অমানবিক। নবাবহাটের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ওই মহিলাকে ধরা হয়।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তকারী অফিসার বিচারকের কাছে পাঠানো চিঠিতে আর্জি জানিয়েছে, ‘এই ঘটনাকে শুধুমাত্র নিন্দনীয় বললে হবে না। উদাহরণ দেওয়ার মতো শাস্তির প্রয়োজন রয়েছে।’ ধৃত আয়েশা বিবিকে মঙ্গলবার বর্ধমান আদালতে তোলা হলে অবশ্য জামিন পান তিনি।

Advertisement

গত ফেব্রুয়ারিতেও বর্ধমান শহরের বড়নীলপুরের শান্তিপাড়ায় এক পরিবারের দু’জনের বিরুদ্ধে কুকুর ছানাকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল। জখম অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায় কুকুরটিকে। পরে একটি পশুপ্রেমী সংগঠনের তরফে বর্ধমান থানায় অভিযোগ করা হয়। গত জুলাই মাসেও খোসবাগানে একটি কুকুরকে আছড়ে মারার অভিযোগ ওঠে। কিন্তু দু’টি ঘটনাতেই অভিযুক্তরা গ্রেফতার হয়নি।

ওই পশুপ্রেমী সংগঠনের দাবি, এনআরএসের ঘটনার পরে বর্ধমান শহরে কুকুর-হত্যায় কেউ গ্রেফতার হল। ওই সংগঠনের সদস্য তথা বর্ধমান থানায় অভিযোগকারী অর্ণব দাস বলেন, “সাধারণত এ ধরণের ঘটনায় মুচলেকা দিয়ে পার পেয়ে যান অভিযুক্তরা। সেখানে এক মহিলাকে গ্রেফতার করা, নিঃসন্দেহে পুলিশের বড় পদক্ষেপ। আমরা আশা করব, ওই মহিলা যাতে শাস্তি পান পুলিশ তার সব রকম ব্যবস্থা নেবে।’’ পুলিশের ভূমিকার উপর পথকুকুরদের নির্যাতন কমাও নির্ভর করেছে, দাবি তাঁদের।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৩ নভেম্বর বিকেলে বর্ধমান শহরের গোদার খন্দেকরপাড়ায় একটি গর্ভবতী কুকুর ও তার তিন শাবককে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ পেয়ে পৌঁছে যান ওই পশুপ্রেমী সংগঠনের সদস্যেরা। তাঁদের অভিযোগ, বাড়ি লাগোয়া মুরগির ঘরের ভিতর কুকুরটি তিনটে শাবক প্রসব করার পরে ধৃত আয়েশা বিবি ঘরটি প্লাস্টিকে মুড়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুড়ে মারা যায় ওই কুকুর ও দুই শাবক। ঘর থেকে বেরিয়ে ছটফট করতে করতে রাস্তার উপর মারা যায় আর একটি শাবক। তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, কোনও রকম উস্কানি ছাড়াই কুকুরটিকে শান্ত মাথায় ‘খুন’ করা হয়েছে। পরিকল্পিত ভাবে ঘটনাটি ঘটানোর জন্য গর্ভবতী কুকুরটি চিৎকার করারও সুযোগ পায়নি।

পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত ভাবে পশুহত্যা (৪২৮ নম্বর ধারা) ও পশুহত্যা বিরোধী আইনের ১১ (এ) নম্বর ধারায় মামলা করেছে। পুলিশের দাবি, জেরায় অভিযুক্ত মহিলা তাদের জানিয়েছেন, কুকুরটি মুরগি খেয়ে ফেলায় রাগেই তিনি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। খোন্দেকার পাড়ার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ঘটনার পরেই দরজা বন্ধ করে ওই মহিলা পালিয়ে যান। অনিলা বেগম, শেখ রবিউলেরা বলেন, “ওই মহিলা খুব অন্যায় করেছেন। আমাদের পাড়ার সবাই ক্ষুব্ধ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement