Fugitive

তালিকা থেকে নাম বাদ ফেরার অভিযুক্তদের

ফৌজদারি কার্যবিধি মেনে ওই অভিযুক্তদের ‘প্রোক্লেমড অফেন্ডার’ ঘোষণা করে আদালত। শুরু হয় নাম বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৪:৪৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত অনেকেই পুলিশের খাতায় ‘ফেরার’। নিবার্চন কমিশনের নির্দেশ মেনে ভোটার তালিকা থেকে তাঁদের নাম বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ১৮৩ জন অভিযুক্তকে ‘পলাতক’ জানিয়ে জেলাশাসককে চিঠি দেন পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। আদালতকেও বিষয়টি জানানো হয়। তার পরেই ফৌজদারি কার্যবিধি মেনে ওই অভিযুক্তদের ‘প্রোক্লেমড অফেন্ডার’ ঘোষণা করে আদালত। শুরু হয় নাম বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া।

বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটার তালিকা সংশোধন চলার সময়ে অনেককেই নির্দিষ্ট দিনে কমিশনের সামনে হাজিরা দিয়ে বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছিল প্রশাসনের তরফে। কিন্তু অনেকেই আসেননি, যোগাযোগও করেননি। ফলে, ভোটার তালিকা থেকে নাম কাটা ছাড়া, উপায় ছিল না, দাবি জেলা প্রশাসনের। নির্বাচন কমিশনও নির্দেশ দিয়েছে, যাঁদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে, তাঁদের এখনও পর্যন্ত ধরা না গেলে, তাঁদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। সে মর্মে কাজ শুরু করেছে জেলা নির্বাচন দফতর।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘পলাতক অপরাধীদের’ তালিকায় প্রথমেই রয়েছে কাটোয়া থানার নাম। সেখানকার ৪৭ জন অপরাধী এখনও পলাতক। তার পরে রয়েছে কেতুগ্রাম। এখানে ৩৬ জন অপরাধী পলাতক বলে চিহ্নিত হয়েছেন। বর্ধমান ও মন্তেশ্বরে পলাতক অপরাধী রয়েছে যথাক্রমে ২১ ও ২০ জন। নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বরের গোড়ায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার জন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে নির্দেশ দেয়। পুলিশের দাবি, ১ ডিসেম্বর থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া ১,২৫৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ‘পলাতক অপরাধী’রা ছাড়া, পুলিশের নাগালের ‘বাইরে’ রয়েছে ৪০৭ জন অভিযুক্ত। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি থাকা সবাইকে ধরার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এই সব অপরাধীদের মধ্যে খুনে অভিযুক্ত রয়েছেন ৭১ জন, নারী সংক্রান্ত অপরাধে অভিযুক্ত রয়েছেন ১১১ জন।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জামিন-অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করা নিয়ে পুলিশকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন কমিশনের কর্তারা। বৈঠকের পরে, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া অপরাধীদের বিরুদ্ধে বিস্তারিত তথ্য চায় কমিশন। দাগী দুষ্কৃতীদের নামের তালিকা তৈরি করে তাদের বর্তমান অবস্থা কী, তার বিস্তারিত তথ্যভাণ্ডার তৈরি করে জেলা পুলিশ। থানাগুলিকে প্রতি সপ্তাহেই আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত রিপোর্ট জেলা পুলিশের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে পাঠাতে হয়। জামিন-অযোগ্য ধারায় সে সপ্তাহে কত জন গ্রেফতার হয়েছে এবং কত জন পলাতক, তারও উল্লেখ থাকে রিপোর্টে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন নতুন যে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে, তাতে সাপ্তাহিক রিপোর্টের সঙ্গে জামিন-অযোগ্য ধারায় অভিযুক্ত পলাতক দুষ্কৃতীদের নামের তালিকা ও তাদের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলার খতিয়ান পৃথক ভাবে চাওয়া হয়েছে।

পুলিশের দাবি, এখনও পর্যন্ত ৫০ জন দাগী দুষ্কৃতীর নামে ১১০ ধারায় নোটিস দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও গোলমাল পাকাতে পারে আশঙ্কা করে ৪,৬২১ জনকে ১০৭ ধারায় নোটিস দেওয়া হয়েছে। দুই ধারাতেই প্রত্যেককে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বিশিষ্টজনের সাক্ষী-সহ মুচলেকা দিয়ে এলাকায় শান্তি বজায় রাখার কথা জানাতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement