Kalna Municipality

নেত্রীর বার্তায় কি পাল্টাবে দ্বন্দ্বের ছবি, চর্চা কালনায়

শুক্রবার কলকাতায় দুই বর্ধমানের নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করেন মমতা। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে দুই জেলার প্রায় ২৫০ জন প্রতিনিধি হাজির ছিলেন।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:১৬
Share:

কালনা পুরসভা। — ফাইল চিত্র।

শহরের ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭টিতে রয়েছেন শাসক দলের পুরপ্রতিনিধি। কিন্তু পুরসভার অন্দরে ‘কোন্দলের’ কারণে পরিষেবা পাওয়ায় সমস্যার অভিযোগ উঠেছে বার বার। পুরসভায় কখনও পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন অধিকাংশ পুরপ্রতিনিধি। কখনও বোর্ডের সভায় বিতণ্ডা চরমে পৌঁছেছে। এমনকী, ১৩ জন পুরপ্রতিনিধি বা কাউন্সিলর পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার চিঠিও দিয়েছেন মহকুমা প্রশাসনকে। দলীয় হস্তক্ষেপে তা বেশি দূর না গড়ালেও, কোন্দল সামনে এসেই পড়েছে। একের পর এক ঘটনায় এ ভাবে পুরপ্রতিনিধিদের দ্বন্দ্ব সামনে এসে পড়ায় লোকসভা ভোটের আগে কালনা পুরসভার দলীয় সদস্যদের কড়া বার্তা দিতে হল স্বয়ং দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এর পরে পরিস্থিতি বদলায় কি না, সে দিকেই নজর শহরবাসীর।

Advertisement

শুক্রবার কলকাতায় দুই বর্ধমানের নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করেন মমতা। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে দুই জেলার প্রায় ২৫০ জন প্রতিনিধি হাজির ছিলেন। কালনা শহর থেকে এই বৈঠকে যোগ দেন তৃণমূলের শহর সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, পুরপ্রধান আনন্দ দত্ত, উপপুরপ্রধান তপন পোড়েল, আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি সন্দীপ বসু, শহর যুব তৃণমূল সভাপতি সৌরভ হালদার এবং আইএনটিটিইউসি-র শহর সভাপতি শান্তি সাহা। রাজ্যের বাইরে থাকায় বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি কালনার তৃণমূল বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ।

দল সূত্রের দাবি, বৈঠকে কালনার পুরপ্রধান ও উপপুরপ্রধানের কাছে তৃণমূল নেত্রী জানতে চান, কাউন্সিলরদের সঙ্গে পুরপ্রধানের দ্বন্দ্ব কেন, গন্ডগোল কেন হচ্ছে? গোলমাল না মিটলে বহিষ্কার করা হবে বা পুলিশ দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এমন কথা শোনার পরে পাল্টা কেউ কিছু বলেননি বলে খবর। বৈঠকে হাজির থাকা কালনা শহরের নেতারা প্রকাশ্যে বিষয়টি নিয়ে শনিবার কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে মনে হয়েছে, পুরসভায় কী কী ঘটেছে, সে বিষয়ে বিশদ তথ্য তাঁর কাছে রয়েছে।’’

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পরে কালনা পুরসভায় কোন্দলের জেরে কার্যত অচলাবস্থার ছবিটা কি পাল্টাবে? জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এর আগে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম কালনার কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। বিধানসভার অধিবেশন শুরু হচ্ছে। কালনা পুরসভা নিয়ে পুরমন্ত্রী, বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, কালনার বিধায়কের উপস্থিতি আরও একটি বৈঠক করা হবে। লোকসভা ভোটের আগে দলবিরোধী কোনও কাজ যাতে কেউ না করেন, সে বিষয়ে বার্তা দেওয়া হবে।’’ তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র তথা কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ জানান, রাজ্যের বাইরে থাকায় শুক্রবারের বৈঠকে তিনি যেতে পারেননি। লোকসভা ভোটের আগে দল যাতে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াইয়ে নামে, সে কথা পুরসভার কাউন্সিলরদের জানানো হবে। তবে শহরের এক নেতার আশঙ্কা, ‘‘পুরসভার কাজকর্ম-সহ নানা বিষয়ে পুরপ্রধানের সঙ্গে মতানৈক্য রয়েছে দলের বেশীর ভাগ কাউন্সিলরের। তা রাতারাতি মেটা কঠিন।’’

কালনা শহরের বাসিন্দা চম্পা মজুমদার বলেন, ‘‘শাসক দলের অন্তর্দ্বন্দ্বে চলতি বোর্ড উন্নয়নের ছবি এখনও তুলে ধরতে পারেনি। বলার মতো কোনও নতুন প্রকল্প এখনও পুরসভা নিতে পারেনি। আশা করছি, মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পরে এই ছবিটা বদলাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement