সাহসী প্রর্থী খুঁজতে ব্যস্ত বাম।
কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের রাস্তা খোলা রেখেই পঞ্চায়েত ভোটের লড়াইয়ে নামতে চাইছে সিপিএম। কয়েক দিন আগে রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের উপস্থিতিতে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়। পঞ্চায়েত স্তরে ৯৫ শতাংশ আসনে প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছে সিপিএম। তবে তফসিলি জাতি বা জনজাতিদের জন্য সংরক্ষিত আসনে প্রার্থীদের শংসাপত্র পাওয়া নিয়ে চিন্তায় রয়েছে দলের জেলা নেতৃত্ব।
সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধীদের পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে এক জায়গায় নিয়ে আসাটাই তাঁদের লক্ষ্য। সে জন্য কংগ্রেসকে আসন ছাড়ার বিষয়টি ভাবনায় রয়েছে। আবার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গত নির্বাচনগুলির মতো বিজেপির প্রতি কোনও দলীয় সদস্য ‘নরম’ মনোভাব দেখালে তাঁর বিরুদ্ধে দল চরম সিদ্ধান্ত নেবে। নির্দল প্রার্থীদের সমর্থন করার বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন সম্পাদকমণ্ডলীর বেশির ভাগ। এক সদস্য বলেন, ‘‘২০১৮ সালে নির্দলদের সমর্থন করা হয়েছিল। কিন্তু বোর্ড গঠনের সময়ে দেখা যায় নির্দলরা তৃণমূলকেই সমর্থন করে বসে আছে। সেই অভিজ্ঞতা আমাদের ভাল নয়।’’ সিপিএমের দাবি, তৃণমূলের একের পর এক দুর্নীতির জন্য একাধিক গ্রাম জাগছে। ফলে ২০১৮ সালের মতো পঞ্চায়েত ভোটে ‘দখলদারি’ করতে পারবে না তৃণমূল। সেই কারণে প্রার্থী হওয়ার পরে স্রেফ হুমকিতে মনোনয়ন তুলে না নেন, এমন প্রার্থীর দিকেই ঝোঁকা হচ্ছে। দলের জেলা কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে ৫০ শতাংশই মহিলা সংরক্ষিত। সেই কারণে গত পাঁচ-দশ বছর ধরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন, তৃণমূলের অত্যাচার দমাতে পারেনি, এমন মহিলাদের প্রার্থী করার কথাভাবা হয়েছে। একই কথা প্রযোজ্য পুরুষদের ক্ষেত্রেও।’’
এক সময়ের বামদূর্গ এখন অতীত। বিধানসভা ভোটে কোনও আসন না পাওয়া, ভোট শতাংশ তলানিতে নেমে যাওয়ার সঙ্গে লড়াই এখন ত্রিমুখী। দলের নিচুতলার রিপোর্ট অনুযায়ী, গলসি, খণ্ডঘোষ, রায়না, ভাতার, মঙ্গলকোট, মন্তেশ্বর-সহ বেশ কিছু বিধানসভা এলাকায় সব আসনে বিজেপি প্রার্থী দিতে পারবে না। বুথ পিছু যে সংগঠন প্রয়োজন, তার ধারে কাছে বিজেপি পৌঁছতে পারেনি। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের দাবি, ‘‘৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পরেও বুথের সংগঠন করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সেখানে বিজেপির পক্ষে বুথ স্তরে নামা অসম্ভব। পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।’’
তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের দাবি, ‘‘বিভিন্ন একে অপরকে আঁকড়ে ধরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অনৈতিক জোট তৈরি করছে ওরা। কিন্তু মানুষ যে বিরুদ্ধে, তা বারবার প্রমাণ হচ্ছে।’’ জেলা কংগ্রেসের পঞ্চায়েত নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান জগদীশ দত্ত বলেন, ‘‘বুথ স্তরে বৈঠক করে প্রার্থী তালিকা তৈরি হচ্ছে। জেলা স্তরে বামেদের সঙ্গে এখনও জোট নিয়ে আলোচনা হয়নি। তবে অনেক এলাকায় স্থানীয় নেতৃত্ব তৃণমূল, বিজেপিকে ঠেকাতে বামেদের সমর্থন করার কথা ভাবছেন।’’