West Bengal Municipal Election 2020

নতুন আলো কি আদৌ বসেছে, প্রশ্ন বিরোধীদের

বিরোধীদের দাবি, গুসকরায় পথের আঁধার কাটানোর জন্য গত কয়েক বছরে বেশ কয়েক কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

গুসকরা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২০ ০২:০৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

কিছু এলাকায় খুঁটিতে আলো রয়েছে। কিন্তু সেই আলো রাস্তা পৌঁছয় না। আবার কিছু এলাকা এখনও রয়ে গিয়েছে আঁধারে। গুসকরা শহরের নানা পথ নিয়ে এমনই অভিযোগ বাসিন্দাদের।

Advertisement

বিরোধীদের দাবি, গুসকরায় পথের আঁধার কাটানোর জন্য গত কয়েক বছরে বেশ কয়েক কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। কিন্তু কোথাও শাসকদলের নেতাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব, কোথাও দুর্নীতির জেরে কাজের কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। শহরে পর্যাপ্ত আলোর সমস্যা কথা মেনে নিলেও তার দায় নিতে নারাজ তৃণমূল নেতারা। শহরের বিদায়ী পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায় দাবি করেন, ‘‘বছর দেড়েক ধরে বোর্ড না থাকায় একটা ফাঁক তৈরি হয়েছে। উচ্চ বাতিস্তম্ভ লাগানোর কাজও আটকে রয়েছে।’’

১৯৮৮ সালের ৩০ মার্চ ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গুসকরা পুরসভা গঠিত হয়। ১৯৯৮ সালে আশপাশের এলাকা সংযুক্ত করে ওয়ার্ড বেড়ে হয় ১৬টি। ২০০৮ সালে বামেদের হাত থেকে পুরসভার দখল নেয় তৃণমূল। শহরে ধীরে-ধীরে হলুদের বদলে সাদা আলো বসে। এখন খুঁটিতে বসেছে এলইডি আলো। তার পরেও শহরে আলোর সমস্যা রয়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের অনেকের। রটন্তী কালীপুজোর সময়ে কিছু বাসিন্দা আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দারের কাছে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভও জানান।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, গুসকরা পুর এলাকায় প্রায় ৩৬০০টি বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে। তার মধ্যে অন্তত এক হাজার খুঁটিতে বাল্ব, টিউবলাইট বা এলইডি নেই। বিদ্যুতের সমস্যা যাতে না হয়, সে জন্য রাজ্য সরকারের ‘গ্রিন সিটি’ প্রকল্পে গুসকরা শহরে দু’দফায় দু’কোটির বেশি টাকা এসেছে। এর মধ্যে একটি অংশ শহরের সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য সরিয়ে রাখা হয়। বাকি টাকা বিদ্যুতের জন্য খরচের সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। প্রায় তিন হাজার খুঁটিতে এলইডি আলো লাগানোর কাজের বরাত দেওয়া হয়। বিরোধীদের অভিযোগ, প্রায় ছ’শো খুঁটিতে পুরনো এলইডি বদলে নতুন লাগানো হয়েছে কি না সন্দেহ রয়েছে।

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, ‘গ্রিন সিটি’ প্রকল্পে সাড়ে ১২ ফুটের উচ্চ বাতিস্তম্ভ বসানোর পরিকল্পনা হয়। সেখানে দেড়শো ওয়াটের ছ’টি করে মার্কারি আলো বসানোর প্রস্তাব নেওয়া হয়েছিল। ১২টি জায়গা ১৪টি উচ্চ বাতিস্তম্ভ বসাতে ৬৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। নিউটাউন, গরুর হাট, আনাজের বাজার, বলগোনা মোড়, আউশগ্রাম মোড়, স্কুল মোড়, বাসস্ট্যান্ডের মতো জনবহুল জায়গায় সেগুলি বসানোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু গত পাঁচ মাসে মাত্র এক জায়গায় ওই বাতিস্তম্ভ বসেছে। বাকিগুলি কবে বসবে, তার সদুত্তর পুর কর্তৃপক্ষের কাছে মেলেনি।

শহরের আঁধার কাটেনি কেন, সে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে বিরোধীরা। পুরসভার বিদায়ী বিরোধী দলনেতা, সিপিএমের মনোজ সাউয়ের অভিযোগ, ‘‘পুরনো এলইডি সরিয়ে ‘গ্রিন সিটি’ প্রকল্পে নতুন এলইডি লাগানোর কথা। কিন্তু আলোর বহর দেখে তো বেশির ভাগেই তা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। গোটাটাই দুর্নীতি।’’ বিজেপির নগর সভাপতি (গুসকরা) পতিতপাবন হালদারেরও অভিযোগ, ‘‘এলইডি আলোও রাস্তা পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে না। দুর্নীতির অন্ধকারে আলোও দেখা যাচ্ছে না।’’

যদিও এ সব অভিযোগ মানতে নারাজ বিদায়ী পুরপ্রধান বুর্ধেন্দুবাবু। তাঁর কথায়, “মানুষ জানেন, আলোর পথ কতটা তাঁরা এগিয়েছেন। বিরোধীদের কথায় কান দেওয়ার কারণ নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement