প্রতীকী ছবি।
‘লকডাউন-পর্বে’ রেশন বণ্টন ব্যবস্থা নিয়ে পশ্চিম বর্ধমানের নানা প্রান্তে অভিযোগ সামনে এসেছে প্রায় প্রত দিনই। এই পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানে জেলা প্রশাসন কিছু পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছে।
জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি শুক্রবার বলেন, “আমরা একটি রূপরেখা তৈরি করেছি। প্রত্যেক গ্রাহক যাতে ঠিক মাত্রায় রেশন পান, সেটা সব রকম ভাবে নিশ্চিত করা হবে। আগামী সপ্তাহ থেকেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার ভাবনাচিন্তা চলছে।’’
বিশেষ ব্যবস্থাটি সম্পর্কে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে: প্রশাসনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে উপভোক্তাদের প্রাপ্য সামগ্রী ঠিক মতো পরিমাপ করে, প্যাকেটে ভরে ‘সিল’ করা হবে। রেশন দোকান থেকে সেই প্যাকেট প্রশাসনের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে বণ্টন করা হবে। উপভোক্তারা প্রাপ্ত সামগ্রীর পরিমাণ সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করলে, দোকানেই তা মেপে নিতে পারবেন।
কিন্তু কেন এমন পদক্ষেপ করাটা জরুরি হল? প্রশাসন, উপভোক্তা-সহ নানা পক্ষের পর্যবেক্ষণ-প্রথমত, কার্ডহীন উপভোক্তাদের ‘ফুড কুপন’ (২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যাঁরা ডিজিটাল রেশন কার্ডের আবেদন করেছেন, অথচ কার্ড হাতে পাননি তাঁদের ওই কুপন পাওয়ার কথা) দিয়ে রেশন দেওয়ার কথা বলা হলেও বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই তা হচ্ছে না। উপভোক্তাদের একাংশের অভিযোগ, ‘কুপন’ আসেনি, এই বলে অনেক রেশন ডিলারই তাঁদের ঘুরিয়ে দিচ্ছেন। সম্প্রতি আসানসোলের কিছু এলাকায় এমন অভিযোগ ওঠে।
দ্বিতীয়ত, ঠিকমতো সামগ্রী বিলি হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। কুলটির বেলরুই ও ঝনকপুড়ায় এমন অভিযোগ উঠেছিল সম্প্রতি।
তৃতীয়ত, কার্ড থাকলেও অনেক সময় রেশন দোকান থেকে জিনিসপত্র মিলছে না। এই পরিস্থিতিতে জেলাশাসকের বক্তব্য, “রেশন থেকে খাদ্যদ্রব্য বিলি যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয়, সে জন্য সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে প্রশাসন।’’
ডিলারদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করলেও, প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা এমআর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনও। পাশাপাশি, সংগঠনের দাবি, অনেক ক্ষেত্রেই রসদ বা ‘কুপন’ না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে জনতার ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে ডিলারদের। সরকারি প্রতিনিধি উপস্থিত থাকলে, সেই সমস্যা অনেকটাই কমবে বলে আশা।