বর্ধমানের বাজারে টাস্ক ফোর্সের পরিদর্শন। শনিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র
‘হটস্পট’ বা ‘স্পর্শকাতর’— কোনও তালিকাতেই এখনও পর্যন্ত নাম নেই পূর্ব বর্ধমান জেলার। করোনা-সংক্রমণের ক্ষেত্রে যাতে জেলার নাম ওই সবের তালিকায় না ওঠে, সে জন্য জেলা জুড়ে কড়া পদক্ষেপ করার কথা জানাল পুলিশ-প্রশাসন। শনিবার সকাল থেকে রাস্তাঘাটে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ‘মাস্ক’ না পরে বেরনোর জন্য জেলার নানা জায়গায় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। তাঁদের মধ্যে কিছু বাসিন্দার বিরুদ্ধে সরকারি নির্দেশ অমান্য ও বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, ৮ এপ্রিল বা তার পরে ভিন্ রাজ্য থেকে আসা বাসিন্দাদের ‘হোম কোয়রান্টিন’-এর বদলে সরাসরি ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে। সে জন্য আশাকর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের চিরুনি তল্লাশি চালানোর নির্দেশ দেয় পুলিশ। সেই সঙ্গে যে সব জায়গায় ভিড় জমার ছবি উঠে আসছে, সেখানেও অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অকারণে রাস্তায় বেরনো আটকানো, ‘মাস্ক’ পরা বাধ্যতামূলক করার দিকে নজর দেওয়ার কথা উঠে আসে। ঘিঞ্জি এলাকায় যে সব বাজার রয়েছে, সেগুলি সম্প্রসারণের ব্যাপারেও জোর দিতে বলা হয়।
ওই সব সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ দিন সকাল ৭টার সময় জেলার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সৈকত হাজরা ও বিপ্লব মণ্ডলের নেতৃত্বে দু’টি দল বর্ধমান শহরের দু’দিকে বাজার, মিষ্টির দোকান, ব্যাঙ্ক, বিভিন্ন মোড়ে অভিযান চালায়। সেই দলে পুলিশ, কৃষি বিপণন দফতর-সহ নানা দফতরের আধিকারিকেরা ছিলেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন বাজারে দাঁড়িয়ে পারস্পরিক দূরত্ব মানা হচ্ছে কি না, তা দেখেন আধিকারিকেরা। কেউ ‘মাস্ক’ ছাড়া বেরলে তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাজারে আনাজ, মাছের দাম ঠিক আছে কি না, ঘুরে দেখেন কর্তারা। দু’-এক জায়গায় ওজনের কারচুপি ধরা পড়ায় এ দিন সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সৈকতবাবু বলেন, ‘‘শহরের তেঁতুলতলা ও কালনা গেটের বাজার ঘিঞ্জি এলাকায়। ওই বাজার দু’টি সম্প্রসারণের জন্য বলা হয়েছে। প্রতিটি বাজারের মুখে স্বেচ্ছাসেবক রাখতে বলা হয়েছে। তাঁরা ক্রেতাদের নিয়ন্ত্রণ করবেন, ‘মাস্ক’ ছাড়া, কাউকে বাজারে ঢুকতে দেবেন না।’’ বর্ধমান থানার পুলিশ জানায়, ক্রেতা-বিক্রেতারা পারস্পরিক দূরত্ব না মানলে বাজার বন্ধ করে দেওয়া হবে। এরই মধ্যে বর্ধমানের বড়নীলপুরে ‘লকডাউন’ অমান্য করে বহুতল আবাসন নির্মাণের কাজ চালানোর অভিযোগে ছ’জন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অরিন্দম নিয়োগী বলেন, ‘‘এখন আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। সে জন্য জেলাশাসকের নির্দেশে মানুষকে সচেতন করায় উদ্যোগ শুরু হয়েছে।’’