প্রতীকী ছবি।
‘লকডাউন’-এর মধ্যে রুজিতে টান পড়ায় মুশকিলে পড়েছিলেন দুই ভিক্ষুক। সে কথা জানার পরে, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে দেয়। রাজ্য সরকারের ‘জয় জোহার’ প্রকল্পে সেই অ্যাকাউন্টে এসেছে দু’মাসের পেনশন। তাতে বর্ধমান স্টেশনের ওই দুই ভিক্ষুকের কিছুটা সুরাহা হলেও সার্বিক ভাবে পূর্ব বর্ধমান জেলা এই প্রকল্পে আবেদন করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশ কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
জেলার অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের দাবি, এই পেনশন প্রকল্পে আবেদন করার নিরিখে রাজ্যের মধ্যে ছ’নম্বরে রয়েছে পূর্ব বর্ধমান। বেশ কিছু পুরসভা ও ব্লক পিছিয়ে থাকায় জেলা কিছুটা পিছিয়ে গিয়েছে।
রাজ্য সরকারের ‘জয় বাংলা’ প্রকল্পে ষাটোর্ধ্ব মানুষজনকে মাসে এক হাজার টাকা পেনশন হিসাবে দেওয়ার জন্য ১ এপ্রিল থেকে অনলাইনে আবেদন নেওয়া শুরু হয়েছে। তফসিলি জাতির জন্য ‘তফসিলি বন্ধু’ ও জনজাতির জন্য ‘জয় জোহার’ প্রকল্প এর মধ্যেই পড়ছে। ‘লকডাউন’ চলায় আবেদন করার সঙ্গেই দু’মাসের টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নিয়ম অনুসারে, যাঁরা আবেদন করবেন, তাঁদের নির্দিষ্ট শংসাপত্র থাকতে হবে। অন্য কোনও প্রকল্পে ভাতা পেলে আবেদন করতে পারবেন না।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমান জেলায় ওই দু’টি প্রকল্প থেকে এক লক্ষ মানুষের আবেদন জমার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। বুধবার দুপুর পর্যন্ত ৩০ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। এ নিয়ে মঙ্গলবার রাতে এক বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। ওই বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান ১ ও ২ ব্লক এবং দাঁইহাট, মেমারির মতো শহরাঞ্চল থেকে আবেদন খুব কম জমা পড়েছে। জেলাশাসক বিজয় ভারতী এই প্রকল্প নিয়ে আরও উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দেন।
জেলা অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘তফসিলি বন্ধু’ প্রকল্পে দাঁইহাট পুরসভার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৮৪৮। সেখানে মাত্র ১৮টি আবেদন জমা পড়েছে। তেমনই মেমারি পুর-এলাকায় ‘জয় জোহার’ প্রকল্পে ৩৬৬ জনের নাম নথিভুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা। সেখানে এখনও পর্যন্ত মাত্র ২৮ জনের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। বর্ধমান ১ ও ২ ব্লকে ওই দু’টি প্রকল্প থেকে আনুমানিক পাঁচ হাজার আবেদনের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিল জেলা প্রশাসন। তার মোটে ১০ শতাংশ নথিভুক্ত হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
এর উল্টো চিত্রও অবশ্য রয়েছে, জানাচ্ছেন আধিকারিকেরা। তাঁদের দাবি, কেতুগ্রাম ১ ব্লকে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৬০ শতাংশ, কাটোয়া ২ ব্লকে ৫৭ শতাংশ নাম নথিভুক্ত হয়েছে ওই দু’টি প্রকল্পে। কাছাকাছি রয়েছে আউশগ্রাম ১ ও ২ ব্লক। জেলার অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের প্রকল্প আধিকারিক শান্তনু বসু বলেন, ‘‘গোড়ায় সমস্যা হয়েছিল। সেই সমস্যা কাটিয়ে এখন প্রতিদিন আড়াই-তিন হাজার নাম নথিভুক্ত হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া ক্রমাগত চলবে।’’