জনধন প্রকল্পের টাকা তুলতে উপচে পড়েছে ভিড়। উধাও করোনা-বিধি। সোমবার রানিগঞ্জের বল্লভপুরের একটি ব্যাঙ্কে। নিজস্ব চিত্র
কেন্দ্রীয় সরকারের জনধন প্রকল্পের টাকা ঢুকেছে বিপিএল তালিকাভুক্তদের অ্যাকাউন্টে। সোমবার সেই টাকা তুলতে আসানসোল শহরের ব্যাঙ্কগুলির সামনে উপচে পড়েছে উপভোক্তাদের ভিড়। অভিযোগ উঠেছে, করোনা সম্পর্কিত কোনও সতর্কবার্তাই এ দিন মানেননি উপভোক্তাদের একটা বড় অংশ। এক সময় ভিড় সামলাতে হিমসিম খেয়েছে পুলিশও।
এ দিন সকাল থেকেই জেলার শিল্পাঞ্চলের একাধিক ব্যাঙ্কের সামনে প্রচুর মানুষের ভিড় চোখে পড়ে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যেহেতু এই প্রকল্পের উপভোক্তারা এটিএম কার্ডের মাধ্যমে টাকা তোলেন না, তাই প্রত্যেকেই টাকা তোলার জন্য সকাল থেকে ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়েছেন। নিয়ামতপুরের একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে গিয়ে দেখা গেল, সব বয়সের মানুষের লম্বা লাইন। নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াননি কেউ। একই ছবি দেখা গিয়েছে আসানসোলের রবীন্দ্রভবন লাগোয়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেও। বেলা যত বেড়েছে ভিড়ও বেড়েছে। ভিড় সামাল দিতে হাজির ছিল পুলিশ। কিন্তু পুলিশের অনুরোধও মানতে চাননি উপভোক্তারা। এই অবস্থায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ব্যাঙ্কের কর্মীরাও। আসানসোলের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজার বলেন, ‘‘ভিড় সামলানো যাচ্ছে না। অধিকাংশ উপভোক্তার মুখে ‘মাস্ক’ নেই। দূরে দাঁড়াতে বললেও শুনছেন না।’’
এই অবস্থায় কোনও কোনও ব্যাঙ্কের শাখা আধিকারিকেরা প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যায় উপভোক্তাকে টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু আপত্তি তোলেন উপভোক্তারাই। তাঁদের দাবি, ব্যাঙ্কে এলে কাউকেই ফেরানো যাবে না। কুলটির বামনডিহার বাসিন্দা রুকসানা বানু এক উপভোক্তা। এ দিন বেশ দেরি করে ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়ানোয় নিয়ামতপুরের একটি ব্যাঙ্কের শাখা আধিকারিক তাঁকে মঙ্গলবার আসার পরামর্শ দেন। কিন্তু তিনি বলেন, ‘‘এই টাকা পেলে ঘরের জন্য খাবার জোগাড় করব। তাই পরের দিনের অপেক্ষা করতে পারব না।’’ ওই শাখা আধিকারিক জানান, বিপিএল তালিকাভুক্তদের প্রায় প্রত্যেকেরই একই অবস্থা। এই সামান্য টাকার উপরেই তাঁদের ঘরের খাবার জোগাড় হচ্ছে। ফলে, ভিড় উপেক্ষা করেই দুপুর ২টো পর্যন্ত যত জনকে সম্ভব টাকা দেওয়া হয়েছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)