সুদীপ্ত ও অর্পিতা। নিজস্ব চিত্র
‘লকডাউন’-এ দেখা হয়নি দেড় মাস। তার উপরে অভিভাবকেরা বিয়ে পিছিয়ে দেওয়ারও তোড়জোড় শুরু করেছিলেন। কিন্তু বর-কনের ইচ্ছায় সানাই, লোকজন, ভোজ ছাড়াই নিঃসাড়ে হয়ে গেল বিয়ে। মাস্ক পরে, সমস্ত বিধি মেনে বিয়ে করেই রাতেই মোটরবাইকে নতুন বউ নিয়ে ফিরে এলেন বর। বর্ধমান শহরের গোলাপবাগ মোড়ের সুদীপ্ত দাস ও ছোটনীলপুরের পীরতলার অর্পিতা রায়ের কথায়, ‘‘বিয়ে এমনিই স্পেশ্যাল। আমাদেরটা অভিনব।’’
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দু’য়েক ধরেই দু’জনের সম্পর্ক রয়েছে। চার মাস আগে বিয়ের দিনও ঠিক হয়। কিন্তু তৃতীয় পর্বের ‘লকডাউন’ ঘোষণা হওয়ায় আতান্তরে পড়েন দুই বাড়ির লোকজন। বিয়ে পিছিয়ে দেওয়ারও চিন্তাভাবনা শুরু হয়। কিন্তু বেঁকে বসেন পাত্র-পাত্রী। সমস্ত নিমন্ত্রণ, প্যান্ডেল, কেটারার বাদ দিয়েই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী সুদীপ্তবাবু জানান, মঙ্গলবার সকালে দু’জন বাইক নিয়ে গিয়ে মেয়ের বাড়িতে গায়ে-হলুদের তত্ত্ব পৌঁছে দেন। ‘মাস্ক’, সামাজিক দূরত্ব যথাসম্ভব মানা হয়। কনের বাড়িতেও খাওয়াদাওয়ার কোনও আয়োজন করা হয়নি। বিকালে শুধু দিদিকে বাইকে বসিয়ে তিনি যান বিয়ে করতে। কনের বাড়িতেই ছোট করে কম সময়ের মধ্যেই পুরোহিত বিয়ে দেন। পরিবারের কয়েকজন সদস্য ছাড়া, কেউ উপস্থিতও ছিলেন না। বিয়ে শেষে বাসরেরও পাট রাখেননি তাঁরা। সুদীপ্তবাবু বলেন, ‘‘বাড়ির টেবিলে খাওয়া সেরেই নতুন বউকে নিয়ে মাস্ক পরে রওনা দিই বাড়ির পথে।’’ আর দিদিকে পৌঁছে দেন পাত্রের এক বন্ধু।
নীলপুর থেকে সর্বমঙ্গলা বাড়ি হয়ে শ্যামলাল, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তা দিয়ে নবদম্পতি বাড়ি ফেরেন। অর্পিতা বলেন, ‘‘সমস্ত আয়োজন হয়ে গিয়েছিল। তাই বিয়েটা পিছোতে চাইনি। বরের বাইকে চেপে শ্বশুরবাড়ি আসাটা স্বপ্নের মতো।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)