বাজেয়াপ্ত হওয়া মদ। নিজস্ব চিত্র
ঝোপ-জঙ্গলের আড়াল-আবডাল। কার্যত জনবসতিহীন ওই এলাকায় হাতবদল চলছিল মদের বোতলের। এমনই খবর পেয়ে সম্প্রতি আসানসোল উত্তর থানা ও আবগারি দফতর কন্যাপুর লাগোয়া সফি মোড়ের ওই এলাকায় অভিযান চালায়। পুলিশ জানায়, নষ্ট করা হয়েছে বাজেয়াপ্ত প্রায় শতাধিক দেশি-বিদেশি মদের বোতল। তবে চম্পট দেয় কারবারি। পুলিশ, প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের ধারণা, এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ‘লকডাউন’ পরিস্থিতির ‘সুযোগ’-কে কাজে লাগিয়ে কিছু জায়গায় চলছে এই অবৈধ কারবার।
আসানসোল উত্তর থানা জানায়, সম্প্রতি রেলপাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকায় অভিযান চালানো হয়। প্রায় ৬৬ বোতল দেশি-বিদেশি মদ বাজেয়াপ্ত হয়। ওই অবৈধ কারবারে জড়িত অভিযোগে মনীশ কুমার নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করা হয়। আসানসোল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ১৪ দিন জেল-হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
কিন্তু কী ভাবে চলছে এই কারবার? প্রথমত, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সামাজিক সংযোগ মাধ্যমে মদের ‘হোম ডেলিভারি’ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞাপন সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়ে আসানসোলে। বিজ্ঞাপনে উল্লেখ থাকা মোবাইল নম্বরে ফোন করলে ‘অনলাইন’-এ টাকা পাঠাতে বলা হচ্ছে। বিনিময়ে যে কোনও ‘ব্র্যান্ড’-এর মদের হোম ডেলিভারির প্রতিশ্রুতি মিলছে। দ্বিতীয়ত, শহরের অপেক্ষাকৃত নির্জন কিছু এলাকায় মদের অবৈধ পসরা সাজিয়ে দিনভর চলছে বিকিকিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মদ্যপায়ী জানান, বাজার চলতি দামের তুলনায় এক-একটি বোতল দু’-তিন গুণ বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
তবে পুলিশ ও জেলা আবগারি দফতর জানিয়েছে ধারাবাহিক অভিযান চালানো হচ্ছে। আবগারি দফতরের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সুপারিন্টেন্ডেন্ট তুহিন নাগের দাবি, ‘‘জেলায় মদ বিক্রি একেবারেই বন্ধ। মদের হোম ডেলিভারির যে খবর প্রচার করা হয়েছে তা ঠিক নয়। মদের অবৈধ কারবার রুখতে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ধারাবাহিক
অভিযান চলছে।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশেষ সূত্রের দাবি, ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন এলাকা ও বিহারের ভাগলপুর থেকে অল্প হলেও মদের বোতল ঢুকছে এই এলাকায়। যদিও আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট এবং আবগারি দফতরের দাবি, সীমানায় মাছি গলার মতোও পরিস্থিতি নেই।