খাতা হাতে চিত্রগুপ্ত। নিজস্ব চিত্র
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সীমনায় নাকা চেকিং চলছেই। বাজার, শহর বা গ্রামাঞ্চলের রাস্তাঘাটে কখনও র্যাফ নামিয়ে, কখনও ‘ড্রোন’ উড়িয়ে নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন। তার পরেও একাংশ মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে জেলার নানা প্রান্ত থেকে। এই অবস্থায় মাঠে নামতে হয়েছে শিল্পী থেকে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্যদের।
করোনা সম্পর্কে সচেতন করতে উদ্যোগী হল অণ্ডালের উখড়ার ‘প্রয়াস’ নামে সামাজিক সংগঠন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সংগঠনের চার জন সদস্য ‘যমরাজ’, ‘চিত্রগুপ্ত’, ‘যমদূত’ ও ‘বিধাতা’ সেজে ঘুরে বেড়ালেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সংগঠনের আরও দশ জন সদস্য, উখড়া পুলিশ আউট পোস্টের আধিকারিক লক্ষ্মীনারায়ণ দে-সহ কয়েকজন পুলিশকর্মী।
প্রথমে তাঁরা উখড়া পুরাতন হাটতলা, স্কুলমোড়, মাধাইগঞ্জ, বাজপেয়ী মোড় সংলগ্ন অস্থায়ী আনাজ বাজারে যান। যাঁরা ‘মাস্ক’ পরেননি বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন না তাঁদের ‘যমরাজ’ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন। পরিয়ে দেন ‘মাস্ক’ও। এর পরে ‘মাস্ক’ না পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখা মানুষের নাম খাতায় লেখার অভিনয় করেন ‘চিত্রগুপ্ত’। এ ভাবেই অভিনয়ের মাধ্যমে মানুষজনকে সচেতন করার চেষ্টা করেন তাঁরা।
তবে অভিনয়ের মধ্যমে সচেতনতার প্রচার জেলায় নতুন নয়। এর আগে দুর্গাপুরে যমরাজ ও করোনা সেজে মানুষজনকে সচেতন করতে দেখা গিয়েছে স্থানীয় দুই শিল্পীকে। এ ছাড়া, অনেক শিল্পী রাস্তায় ছবি এঁকে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কী ভাবে দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হয় তাও দেখিয়েছেন।
এ সবের পরেও অবস্থার যে খুব একটা পরিবর্তন হয়নি, তা মনে করছেন জেলার বাসিন্দাদের একাংশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘লকডাউন’ ঘোষণা হওয়ার পরে, উখড়া বাজারের আনাজ ও ফল ব্যবসায়ীদের সার্কাস মাঠে স্থানান্তর করা হয়। একই ভাবে অণ্ডাল দক্ষিণ বাজার লাগোয়া রেলের ফাঁকা জায়গা থেকে আনাজ বাজার রেলের গিয়ার গ্রাউন্ডে সরানো হয়েছে।
অথচ, শুক্রবার দু’জায়গাতেই দেখা গিয়েছে, প্রায় ৩০ শতাংশ ক্রেতা ও বিক্রেতা ‘মাস্ক’ না পরেই লেনদেন করছেন। এ ছাড়া, উখড়া, কাজোড়া ও অণ্ডালে ব্যাঙ্কগুলির সামনেও লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে। সেখানেও সামাজিক দূরত্ব প্রায় উপেক্ষিত বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিডিও (অণ্ডাল) ঋত্বিক হাজরা বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। ইতিমধ্যেই অণ্ডাল ব্লকে সরকারি নির্দেশিকা না মানার অভিযোগে ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ ওই সংগঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি জানান, প্রশাসনের তরফে প্রচার চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আর এ ভাবে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টাকে প্রশাসন সহযোগিতা করবে।