বর্ধমান শহরে মিছিল।
এত দিন একই কর্মসূচিতে তৃণমূলের একাধিক মিছিল দেখত কালনা শহর। রবিবার শাসক দলের সব ‘গোষ্ঠী’র নেতা ও তাঁদের অনুগামীদের একই মিছিলে হাঁটতে দেখা গেল।
কালনার তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে ময়দানে নেমেছিলেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। এ দিন পেট্রল-ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের দামবৃদ্ধির প্রতিবাদে কালনা শহরে ডাকা মিছিলে দলের ‘ঐক্যবদ্ধ’ চেহারা দেখে খুশি তাঁরা।
তৃণমূলের শহর সভাপতি দেবপ্রসাদ বাগের বক্তব্য, ‘‘গোষ্ঠী-কলহ কোনও দিনই ছিল না। দল সব সময় এক হয়ে লড়াইয়ে ঝাঁপিয়েছে।’’ তবে আগে কেন একই কর্মসূচিতে একাধিক মিছিল হত? তাঁর উত্তর, ‘‘শহর বড়। তাই, দিক ভাগ করে কর্মসূচি পালন করা হত।’’
বিশ্বজিৎ তৃণমূলে থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে দেবপ্রসাদ বাগের বিরোধ ছিল শহরে আলোচনার অন্যতম বিষয়। বিশ্বজিৎবাবু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে কালনায় দলে ভাঙন ঠেকাতে সক্রিয় হন তৃণমূল জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ। বিশ্বজিৎ-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত কালনা পুরসভার কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলেন নেতৃত্ব। দলত্যাগের প্রবল গুঞ্জন থাকলেও বিশ্বজিৎ-ঘনিষ্ঠ পুরসভার পাঁচ বিদায়ী কাউন্সিলর জানিয়ে দেন, তাঁরা তৃণমূল ছাড়ছেন না। সূত্রের খবর, সম্প্রতি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুই ‘গোষ্ঠী’র নেতাদের বৈঠকও হয়। ঠিক হয়, তাঁরা এক হয়ে মাঠে নামবেন।
রবিবার কালনার পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে মিছিল শুরু হয়। ছিলেন স্বপনবাবুও। বেজেছে সাউন্ড বক্স। ‘খেলা হবে’ স্লোগান দিয়ে নাচতে দেখা গিয়েছে অনেককে। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘দলের সর্ব স্তরের নেতানেত্রীরা মিছিলে হেঁটেছেন।’’ ‘খেলা হবে’ স্লোগান প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘জেতার জন্য খেলা তো হবেই। ভোট-যুদ্ধের খেলায় সবাই যোগ দেয়। আমরা সাধারণ মানুষকেও খেলায় যোগদান করাতে পেরেছি।’’ সাউন্ড বক্স-এর ব্যবহার নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ শব্দ-বিধি মেনেই মাইক বেজেছে।’’
কালনার বিজেপি নেতা ধনঞ্জয় হালদারের পাল্টা দাবি, ‘‘আমরাও চাইছি ভাল খেলা হোক। তবে খেলার মাঠে বারবার ফাউল হবে। দর্শক গ্যালারি থেকে নেমে আসবেন। কালনায় তৃণমূল এক হয়ে মিছিলে হাঁটলেও ভিতরে বিভেদ ঘোচেনি।’’
কালনা শহরে মিছিল। নিজস্ব চিত্র।
এ দিন বর্ধমান শহরে অবশ্য তৃণমূলের দু’টি মিছিল হয়। বরাবর ‘বিরোধী’ বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা খোকন দাস ও অরূপ দাস দুটি মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন। তবে কেউই দ্বন্দ্বের কথা মানেননি।
তেলিপুকুর থেকে কার্জনগেট হয়ে রাজবাটী পর্যন্ত মিছিলে ছিলেন অরূপবাবু ও যুব তৃণমূল সভাপতি রাসবিহারী হালদার। একই সময়ে খোকন দাসের নেতৃত্বে উল্লাস মোড় থেকে নবাবহাট পর্যন্ত বাইক মিছিল হয়। অরূপবাবুর দাবি, ‘‘দলের নির্দেশে মিছিল করা হয়েছে। আর কোথাও মিছিল হয়েছে কি না, ঠিক জানি না।’’ খোকনবাবুর পাল্টা দাবি , ‘‘দলের তরফে মিছিল হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু রাজ্যের এক মন্ত্রী আসবেন ঠিক ছিল। তাই উল্লাস মোড়ে জড়ো হয়েছিলাম। সেখান থেকে মিছিল করেছি।’’
কাটোয়ার করুই অঞ্চলে বাড়ি বাড়ি ঘোরেন তৃণমূল কর্মীরা। ভাতার ব্লক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে বলগোনায় বিক্ষোভ হয়।।