নজরে কৃষি
burdwan

জল পেতেই বোরো চাষে গতি

গতবার বোরো চাষের জন্য সেচখাল থেকে এক ফোঁটাও জল মেলেনি। আমন মরসুমের শুরুর দিকেও জল নিয়ে হাহাকার ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৩৪
Share:

বোরো ধান বুনছেন চাষিরা, কালনার গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

সেচখালে জল আসতেই গত কয়েকদিনে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক পূরণ হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছে জেলা কৃষি দফতর। কর্তাদেরও দাবি, গত বছরের চেয়ে এ বার বোরো চাষের এলাকা বাড়বে। উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সমহারে জল পাচ্ছেন চাষিরা। সে জন্য এ বছর বোরো ধানের এলাকা অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করছি।’’এ বছর গতবারের চেয়ে অনেকটা এলাকা বাড়িয়ে এক লক্ষ ৫৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কৃষি দফতর।

Advertisement

গতবার বোরো চাষের জন্য সেচখাল থেকে এক ফোঁটাও জল মেলেনি। আমন মরসুমের শুরুর দিকেও জল নিয়ে হাহাকার ছিল। তার পরেও লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি আমন চাষ হয়েছে জেলায়। গত বছর বোরোয় সেচখালের মাধ্যমে জল না পেলেও সাবমার্সিবল, গভীর নলকূপ, পাম্পের সাহায্যেই এক লক্ষ ৩৫ হাজার ৪৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। দফতরের হিসাবে, গত বছর গড়ে প্রতি হেক্টরে ৫.৪১ টন ধান উৎপাদন হয়েছে। আর এ বছর বীজতলার সময় থেকেই সেচখাল থেকে জল পাচ্ছেন চাষিরা। জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে জেলা জুড়ে ধান রোপন শুরু হয়ে গিয়েছে। গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলায় ৩৬ হাজার ৭৭২ হেক্টর জমিতে ধান রোপন করা হয়েছিল। এ বার শুক্রবার পর্যন্ত গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণেরওবেশি রোপন করা হয়েছে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৮৮ হাজার হেক্টর জমিতে ধান রোপন করা হয়েছে।

গলসির চাষি শেখ জায়েদ, প্রিয়রঞ্জন ঘোষেরা বলেন, “সময়ে সেচের জল পাওয়ায় গত বারের মতো অতান্তরে পড়তে হয়নি। আবার আমন মরসুমের জন্য হাপিত্যেশও করতে হয়নি। ফলে গতবারের চেয়ে বেশি জমিতে বোরো বুনেছি। চাষের কাজ প্রায় শেষ।’’ ভাতারের শেখ আব্দুল হানিফ, মেমারি প্রণব রায়দেরও কথায়, “বোরো মরসুমে চাষিদের জল কেনার জন্য প্রচুর টাকা খরচ করতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ে চাষ করতে পারায় খরচও অনেকটা কম লাগছে। সেই টাকায় বাড়তি জমিতে চাষ করা যাচ্ছে।’’

Advertisement

জগন্নাথবাবুর কথায়, “ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত বোরো ধান রোয়া হবে। ততদিনে আমরা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাব।’’

কৃষি ও সেচ দফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে মাত্র ৪৪ হাজার হেক্টর জমির জন্য জল পাওয়া গিয়েছিল, তার পরেও ১ লক্ষ ৭২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়। ২০১৭ সালে ১২ হাজার হেক্টর জমির জন্য জল মিলেছিল। চাষ হয়েছিল এক লক্ষ ৪১ হাজার জমি। গত বছর জল মেলেনি, তার পরেও এক লক্ষ হেক্টর ৩৫ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। এ বছর সাড়ে ৩৩ হাজার হেক্টর জমির জন্য জল পাওয়া যাবে। কৃষি দফতরের কর্তারা মনে করছেন, ২০১৬ সালের মতো বোরো ধান চাষ করা যাবে।

জানা গিয়েছে, মেমারি ১ ও ২ ব্লক, ভাতার, জামালপুর, বর্ধমান ১ ও ২, গলসি ১ ও ২, আউশগ্রাম ১ ও ২-সহ মোট ১০টি ব্লকে বোরো চাষের জল দেওয়া হচ্ছে। বাকি এলাকায় সাবমার্সিবল, গভীর নলকূপের মাধ্যমে চাষ হচ্ছে। সেচ দফতরের দামোদর ডিভিশনের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (বর্ধমান) ভাস্করসূর্য মণ্ডল বলেন, “পূর্ব বর্ধমান-সহ চার জেলার জন্য ৪ লক্ষ ৮৮ হাজারের বেশি একর ফুট জল ছাড়া হবে। এর মধ্যে মরসুমের শুরুতেই প্রায় দেড় লক্ষ একর ফুট জল ছাড়া হয়ে গিয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement