অভাব সাফাইয়ের। দাঁইহাটে। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়
যে জল সরবরাহ করা হয়, তা পানের অযোগ্য। শহরের নানা জায়গায় খোলা পড়ে থাকে ডাস্টবিন। গ্রিন সিটি প্রকল্পে সৌন্দর্যায়নের উদ্যোগ হয়েছিল। তা-ও মুখ থুবড়ে পড়েছে দেখভালের অভাবে। দাঁইহাট শহরের নাগরিক পরিষেবা নিয়ে এমনই নানা অভিযোগ নাগরিকদের।
শহরবাসীর একাংশের দাবি, দাঁইহাটে পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিনের। রাস্তার কলগুলি থেকে জলের সঙ্গে আবর্জনা ও শেওলা বেরোয়। পুরসভার সরবরাহ করা জল পানের অযোগ্য। এমনকি, স্নান করতে গেলেও জল ছেঁকে নিতে হয়। নিকাশি ব্যবস্থাও তথৈবচ। সামান্য বৃষ্টিতেই শহরের নানা এলাকায় জল জমে। অনেক জায়গায় নিকাশি নালাই গড়ে তোলা যায়নি।
দাঁইহাট পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৪০ বছর আগে দেওয়ানগঞ্জ, ভাউসিং পাড়া, বাজার পাড়া, চামপচা রোড, স্টেশন রোড-সহ প্রধান রাস্তাগুলির নীচে জল সরবরাহের পাইপ পাতা হয়েছিল। এর পরে ধাপে ধাপে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ও গলির ভিতরে নতুন পাইপ লাইন বসানো হলেও পুরনো পাইপ বদলানো হয়নি। সেই সব পাইপের গায়ে লেগে থাকা নোংরা ও শ্যাওলা জলের মধ্যে মিশে যায়। সেই দূষিত জলই নতুন পাইপ লাইনের মাধ্যমে শহরের বিভিন্ন ট্যাপকলে পৌঁছেযায়। সেই দূষিত জলই সংগ্রহ করতে বাধ্য হন অনেকে। বৈরাগ্য পাড়ার বাসিন্দা গোপী বৈরাগ্যের কথায়, ‘‘শহরের বড় সমস্যা হল জল। দিনে চার বার জল পেলেও তা পানীয় হিসেবে ব্যবহার করতে পারছি না। প্রায়ই নোংরা, আবর্জনা বেরিয়ে আসে জলের সঙ্গে।”
অনেক আগেই শহরের রাস্তায় খোলা ডাস্টবিন রাখা যাবে না বলে সরকারের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। সাফাইকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাঁশি বাজিয়ে বর্জ্য সংগ্রহ করেন। অভিযোগ, এখনও দাঁইহাট শহরের নানা জায়গায় খোলা ডাস্টবিন দেখা যায়। সেগুলি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। নোংরা-আবর্জনা জমে এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে। শহরবাসীর একাংশের দাবি, গ্রিন সিটি প্রকল্পে শহর সাজানো হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অনেক কিছুই নষ্ট হতে বসেছে। কোথাও পথবাতি ভেঙে পড়েছে। কোথাও আবার পুকুরের ধারে লাগানো বাহারি গাছ জলের অভাবে শুকিয়ে গিয়েছে। নষ্ট হয়ে গিয়েছে ফোয়ারাও।
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দাঁইহাট পুরসভার ১৪ টি ওয়ার্ডে নানা জায়গায় রাস্তা-ঘাট, পুকুর, নর্দমাগুলি পরিষ্কার করা হয় না। রাস্তার ধারে ধারে আবর্জনা জমে থাকে। কোথাও কোথাও টানা চার-পাঁচ ধরে জমে থাকে আবর্জনা। ফলে, দুর্গন্ধ ছড়ায়। ক্ষোভ বাড়লে সাফাইকর্মীরা কাজে নামেন। তা-ও কোনও রকমে দায়সারা ভাবে কাজ হয় বলে অভিযোগ শহরবাসীর একাংশের। পুরসভা সূত্রের খবর, শহর পরিষ্কার রাখার জন্য ১২০ জন সাফাইকর্মী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কম-বেশি ৪০ জন মহিলা। এই সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে দাবি শহরবাসীর একাংশের।
দাঁইহাটের পুরপ্রধান প্রদীপ রায়ের প্রতিক্রিয়া, “সাফাইকর্মীরা নিয়মিত শহর পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন রাখেন। অম্রুত প্রকল্পে জলের সমস্যা মেটানো হবে। নতুন করে দু’টি রিজ়ার্ভার করা হবে। পুরনো পাইপগুলিও পাল্টানো হবে।’’