কারখানার সামনে। নিজস্ব চিত্র
বন্ধ বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানার কর্মী আবাসন এলাকায় দু’দিন ধরে জল সরবরাহ বন্ধ। প্রতিবাদে, বুধবার কারখানার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন আবাসিকেরা। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলে বিক্ষোভ-অবস্থান। দুপুরের দিকে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বৈঠক করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন আধিকারিকেরা। এর পরেই বিক্ষোভ উঠে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ কার্যালয়ের গেটে জড়ো হন কয়েকশো মহিলা-পুরুষ। তাঁদের অভিযোগ, সোমবার আবাসন এলাকায় পানীয় জলের সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে। ফলে, তাঁরা নির্জলা রয়েছেন। জলের সংযোগ জুড়ে দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করা হলেও আধিকারিকদের হেলদোল নেই। তাই বাধ্য হয়ে এ দিন সকাল থেকে তাঁরা কার্যালয়ের গেটে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন। হিরাপুর থানার পুলিশ এসেও বিক্ষোভ তুলতে পারেনি। বিক্ষোভকারীরা জানিয়ে দেন, আধিকারিকেরা ব্যবস্থা না নিলে, তাঁদের কার্যালয় থেকে বেরোতে দেওয়া হবে না। তাঁদের পক্ষে শিপ্রা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রায় তিন কিলোমিটার দূর থেকে জল বয়ে আনতে হচ্ছে। তবুও প্রয়োজন মিটছে না।’’ কারখানার প্রাক্তন অস্থায়ী কর্মী গঙ্গা সেনগুপ্ত জানান, কোনও কিছু না জানিয়ে এ ভাবে জল বন্ধ করে দেওয়ায় প্রায় ২০০টি পরিবার বিপাকে পড়েছে। অবশেষে দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন দুই আধিকারিক গৌতম গঙ্গোপাধ্যায় ও অসীম ভট্টাচার্য। তাঁদের আশ্বাসে বিক্ষোভ উঠে যায়।
আবাসিকদের আরও অভিযোগ, আবাসনে ঠিকমতো বিদ্যুৎও সরবরাহ করা হচ্ছে না। সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না। কলেজ পড়ুয়া প্রিয়াকুমারী প্রসাদ বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ না থাকায় অনলাইন ক্লাস করতে সমস্যা হচ্ছে।’’
জল সরবরাহ বন্ধ কেন? আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, কারখানার ভিতর থেকে যে পাইপলাইনটি আবাসন এলাকায় গিয়েছে, সেটি ভেঙে যাওয়ায় জল সরবরাহ বন্ধ হয়েছে। তা মেরামত করে জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আধিকারিকদের দাবি, ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর এই কারখানার সমস্ত শ্রমিক-কর্মীকে তাঁদের পাওনা মিটিয়ে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবাসনও খালি করে চলে যেতে বলা হয়েছিল। ফলে, আবাসনের জল-বিদ্যুৎ সরবরাহের কোনও দায়িত্ব কারখানার নেই। তবুও তাঁরা আবাসনে রয়েছেন। মানবিকতার খাতিরে গত দু’বছর ধরে জল-বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। এ জন্য কারখানাকে প্রতি মাসে প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা বিদ্যুতের বিল মেটাতে হচ্ছে। তাঁরা জানান, অগস্ট মাসে কর্পোরেটের তরফে ১ সেপ্টেম্বর থেকে জল-বিদ্যুৎ পুরোপুরি বন্ধ করার নির্দেশ এসেছে।
যদিও সংস্থার প্রাক্তন কর্মী তথা সিটু নেতা দেবাশিস কর্মকারের দাবি, শ্রমিক-কর্মীদের এখনও কিছু টাকা বকেয়া আছে। তা না মেটানো পর্যন্ত তাঁরা আবাসন ছেড়ে যাবেন না।