তপ্ত পথে। দুর্গাপুরের ইন্দো-আমেরিকান মোড়ে। ছবি: বিকাশ মশান।
ক্যালেন্ডারে সবে এপ্রিল পা রেখেছে। শুরু থেকেই পারদ চড়তে শুরু করেছে। দক্ষিণবঙ্গের ১০ জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। এর মধ্যে রয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলাও। সতর্কতা জারি হতেই আঞ্চলিক প্রশাসন এলাকায় পানীয় জলের সরবরাহ থেকে গরমে অসুস্থদের উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য জেলা ও ব্লক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সজাগ থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার আসানসোল-সহ পাশের এলাকায় দিনের তাপমাত্র ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে ঘোরাফের করেছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা যায়, আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত শিল্পাঞ্চলের দিনের তাপমাত্র প্রায় এ রকমই থাকবে। তবে রাতের দিতে তাপমাত্র কিছুটা কমবে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কম হওয়ায় গায়ে জ্বলন অনুভূত হবে। পাল্লা দিয়ে বইছে লু। ফলে, সকাল ১০টা বাজলেই পথঘাট কার্যত ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। নিতান্ত প্রয়োজনে যাঁরা বেরোচ্ছেন তাঁরা গোটা শরীর ও মুখ ঢেকে রাখছেন। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা যায়, শনি ও রবিবার বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু শুধু মেঘ করে থাকলে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়বে। এতে অস্বস্তি আরও বাড়বে।
পানীয় জলের সরোবরাহ স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে আঞ্চলিক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। আসানসোল পুরসভার ১০৬টি ওয়ার্ডের কোথাও যেন জলের অভাব না হয়, তা নজরে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র বিধান উপাধ্যায়। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে বার্নপুরে ডিহিকা জলপ্রকল্প পরিদর্শন করা হয়। কয়েকটি পাম্প ঠিক মতো কাজ করছে না। গরমের সময়ে জল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পাম্পগুলি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামত করা হচ্ছে। গরমের কারণে দামোদর নদে জলের স্তর অনেক কমে গিয়েছে। ফলে, পুরসভা এলাকায় পর্যাপ্ত জল সরবরাহ বিঘ্ন ঘটছে। তাই প্রয়োজনের ভিত্তিতে ট্যাঙ্কে করে জল সরোবরাহ করা হবে বলে জানান মেয়র।
জেলার আটটি ব্লকে জলের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার যাবতীয় ব্যবস্থা হয়েছে বলে দাবি জেলা পরিষদ সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউরির। জানা গিয়েছে, বারাবনি সালানপুর, বরাকর, অন্ডাল ও জামুড়িয়ার কিছু এলাকায় জলের সঙ্কট শুরু হয়েছে।
রোদের তাপে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কেউ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে আপৎকালীন চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন, “পর্যাপ্ত ওআরএস মজুত রয়েছে। চাইলে রোগীরা তা পাবেন। আপৎকালীন চিকিৎসারও বন্দোবস্ত রয়েছে।”