হাতির গতিবিধিতে নজর, হচ্ছে ‘টাওয়ার’

কিন্তু কেন এমন তোড়জোড়? বন দফতর সূত্রে খবর, বাঁকুড়ার সোনামুখী, পাত্রসায়র হয়ে দামোদর পেরিয়ে হাতির দল গলসির চাকতেঁতুল, লোয়া-কৃষ্ণরামপুর, লোয়া-রামগোপালপুর এলাকায় ঢুকে পড়ে। কখনও সেই পালে দু’-তিনটি হাতি থাকে, কখনও বা সেই সংখ্যা অনেক বেশিও হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

 গলসি শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৯ ০২:২০
Share:

ফাইল চিত্র।

বাঁকুড়া থেকে দামোদর পেরিয়ে প্রায় প্রতি বছরই হাতি ঢুকে পড়ে পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে। এর জেরে নানা বিপত্তি ঘটছে। জেলা বন দফতর জানায়, হাতির গতিবিধি নজরে রাখতে ও ক্ষতির বহর কমাতে গলসিতে দামোদর লাগোয়া এলাকায় তিনটি ‘ওয়াচ টাওয়ার’ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে।

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে মুখ্য বনাধিকারিক (ডিএফও, পূর্ব বর্ধমান) দেবাশিস শর্মা বলেন, “জোরকদমে চলছে ওয়াচ টাওয়ার তৈরির কাজ। ওই টাওয়ারগুলি থেকে হাতির গতিবিধি নজর রাখা হবে। একই সঙ্গে এলাকায় হাতি ঢোকার আগেই গ্রামবাসীকে সতর্ক করা হবে।”

কিন্তু কেন এমন তোড়জোড়? বন দফতর সূত্রে খবর, বাঁকুড়ার সোনামুখী, পাত্রসায়র হয়ে দামোদর পেরিয়ে হাতির দল গলসির চাকতেঁতুল, লোয়া-কৃষ্ণরামপুর, লোয়া-রামগোপালপুর এলাকায় ঢুকে পড়ে। কখনও সেই পালে দু’-তিনটি হাতি থাকে, কখনও বা সেই সংখ্যা অনেক বেশিও হয়। সম্প্রতি গলসির সীমনড়িতে দু’টি দাঁতাল ঢুকে খেতে দাপিয়ে বেড়িয়েছিল। চাষিরা জানান, এর জন্য বহু জমির ধান নষ্ট হয়ে যায়। এমনকি, হাতির হামলায় বাবা জখম হয়েছেন জানিয়ে হাতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে থানা পর্যন্ত ছুটেছিলেন এক তরুণী! সেই অভিযোগ অবশ্য শেষমেশ বন দফতরে পাঠিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে পুলিশ। ২০১৫-য় গলসিতেই হাতি শুঁড়ে তুলে আছাড় মারায় মৃত্যু হয় এক প্রবীণের। গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রোকেয়া বেগম বলেন, “অনেক সময়ে খাবারের খোঁজে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে হাতি। তখন সমস্যা আরও বাড়ে। হাতির হানায় গলসিতে গবাদি পশুর মৃত্যু, ঘরবাড়ি ও শষ্যের ক্ষতি প্রতি বছরের রুটিন। বন দফতর সে জন্যই ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে শুনেছি।’’

Advertisement

বন দফতরের এক কর্মী জানান, বাঁকুড়ার দলমার থেকে হাতি এই জেলায় প্রবেশ করে গলসির কসবা, শিল্ল্যা ও গোহগ্রাম দিয়ে। এটিই ‘হাতি করিডর’। এই পরিস্থিতিতে গলসিতে দামোদর লাগোয়া এলাকায় ‘ওয়াচ টাওয়ার’ তৈরি করা জরুরি হয়ে পড়েছিল। ডিএফও জানান, ‘করিডর’-এর পাশাপাশি, ওই তিন এলাকায় একটি করে ‘ওয়াচ টাওয়ার’ তৈরির আরও একটি কারণ, ওই এলাকাগুলি থেকে আশপাশের অনেকটা জায়গায় নজর রাখা সম্ভব।

গ্রামবাসীকে অভিযোগ করতে দেখা যেত, হাতির লোকালয়ে আসার খবর আগাম জানাতে পারে না বন দফতর। বন দফতরের আশা, ‘ওয়াচ টাওয়ার’ তৈরি হলে সেই সমস্যা মিটবে। কারণ, সেগুলি থেকে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালাবেন বন দফতরের কর্মীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement