ঘুরে-দেখা: রসুইয়ের বাঁধ পরিদর্শনে কর্তারা। নিজস্ব চিত্র
বালিবোঝাই ট্রাক চলাচলের জন্য অজয়ের বাঁধ কেটে ফেলায় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে, এই দাবিতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কেতুগ্রামের রসুই গ্রামের বাসিন্দারা। মঙ্গলবার রসুইয়ে বাঁধের ওই কাটা অংশটি পরিদর্শনে আসেন ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর এবং সেচ বিভাগের কর্তারা। জানানো হয়, বাঁধ কেটে ফেলা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। রসুই সংলগ্ন মঙ্গলকোটের শ্যামবাজার ঘাটের ইজারাদারকে সাত দিনের মধ্যে বাঁধটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে বলা হয়। না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়।
প্রশাসন সূত্রে খবর, রসুইয়ের পশ্চিমে অজয়ের বাঁধ ১২ ফুট চওড়া ও ৯ ফুট গভীর করে কেটে রাস্তা তৈরি হয়েছে। শ্যামবাজার ঘাট থেকে তোলা বালি নিয়ে দেদার ট্রাক ও ডাম্পার চলাচল করে ওই রাস্তায়। রসুই এমনিতেই বন্যাপ্রবণ। স্থানীয়দের দাবি, বর্ষায় ওই অংশ দিয়ে জল এসে শুধু রসুই নয়, কেতুগ্রাম ২ ব্লকের ৬টি পঞ্চায়েত এলাকা প্লাবিত হতে পারে। এ ছাড়া, ওই অংশে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে, রসুই ছাড়াও অজয়ের বাঁধ কোথাও ১২ ফুট তো কোথাও ১০ ফুট লম্বা করে কেটে ফেলা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাটি কাটায় বাঁধের স্থিতিও নষ্ট হচ্ছে।
সেচ বিভাগ সূত্রে খবর, মঙ্গলকোটের খেঁড়ুয়া ও কোঁয়ারপুরে বাঁধ কেটে বালি পাচার হচ্ছে। চলছে একাধিক অবৈধ বালি খাদানও। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর জানিয়েছে, মঙ্গলকোটে বর্তমানে ১০টি বৈধ ঘাট রয়েছে। কোঁয়ারপুর ও পশ্চিম নবগ্রামের ঘাট থেকে বালি তোলা হচ্ছে অবৈধ ভাবে। এ দিন রসুইয়ে পরিদর্শনে এসে অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) প্রণব বিশ্বাস বলেন, ‘‘কোনও ভাবেই বাঁধ কেটে ফেলা বরদাস্ত করা হবে না। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ। দু’পাশে ঢালু করে মাটি ভরাট করে রাম্প তৈরি করতে হবে।’’ তিনি ইজারাদার নাজমুল হককে জানান, সাত দিনের মধ্যে রসুইয়ে বাঁধকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাঁধ মেরামতির প্রতিশ্রতি দেন নাজমুলও। অন্য দিকে, রসুই ঘাট থেকে অবৈধ ভাবে তোলা বালির ট্রাক যাতায়াতের ফলে রাস্তা ভেঙে যাওয়ার অভিযোগ তুলে সোমবার ৫০টি ট্রাক আটকে ভুলকুরি-রসুইয়ের রাস্তা অবরোধ করেছিলেন কেতুগ্রামের মালিয়ার বাসিন্দারা। আগামী সপ্তাহে ওই ঘাট পরিদর্শন করে জায়গা চিহ্নিতকরণ করা হবে বলে জানান কেতুগ্রামের ভারপ্রাপ্ত ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক দেবাশিস বিশ্বাস।