গ্রামবাসীর বিক্ষোভ। যবুনা গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।
‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্পে বাড়ি-বাড়ি জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জল পৌঁছচ্ছে না সব বাড়িতে। বেশ কিছু দিন ধরে প্রবল জলকষ্ট শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের ইছাপুর পঞ্চায়েতের যবুনা গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের। প্রতিবাদে তাঁরা বুধবার গ্রামে বিক্ষোভ দেখান। পাশাপাশি, গ্রামে তৃণমূলের পথসভার প্রস্তুতি চলছিল। তা-ও এলাকাবাসী করতে দেননি বলে দাবি।
জলের দাবিতে সকালে এলাকার মহিলারা প্ল্যাকার্ড ও ফাঁকা বালতি-কলসি নিয়ে মিছিল করেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রখর গ্রীষ্মে পানীয় জল না পেয়ে চরম দুর্ভোগে দিন কাটছে তাঁদের। দূর থেকে জল বয়ে এনে কোনও রকমে কাজ চালাতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা সুমিত্রা পাল বলেন, “এই গরমে জল নেই। কী ভাবে যে আমাদের দিন কাটছে, তা বলার নয়।” মীনা মণ্ডল নামে এক জন বলেন, “বাড়ি-বাড়ি সংযোগ দেওয়ার পরে আর জল পাওয়া যাচ্ছে না। এলাকার অনেক কলেই জল পড়ে না।” স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেও জলের সমস্যা রয়েছে। কেন্দ্রের কর্মী অঞ্জলী রাউথ জানান, সেখানে কল থাকলেও জল পড়ে না। অন্য জায়গা থেকে জল এনে রান্না করতে হয়।
এ দিন বিক্ষোভ চলাকালীন আসানসোল উপনির্বাচনের প্রচারে গ্রামে পথসভার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল তৃণমূল। বিক্ষোভকারীরা পথসভার জন্য নিয়ে আসা সাউন্ড সিস্টেম, চেয়ার ফিরিয়ে দেন। তাঁদের দাবি, জলের সমস্যা না মেটা পর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি গ্রামে করা যাবে না। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (খাদ্য) সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, “গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা হয়েছে। অতি শীঘ্র ব্যবস্থা হবে। দরকার হলে সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হবে। গ্রামবাসীকে আপাতত শান্ত হওয়ার আর্জি জানিয়েছি।” তৃণমূল পরিচালিত ইছাপুর পঞ্চায়েতের প্রধান উজ্জ্বল মণ্ডল জানান, বিকল্প হিসাবে আপাতত ট্যাঙ্কারে করে জল পাঠানো হবে। দ্রুত যাতে সমস্যা মেটে, সে জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। দলের নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূল পরিচালিত প্রশাসন যে ন্যূনতম নাগরিক পরিষেবা দিতে ব্যর্থ, এই ঘটনা তার প্রমাণ।” সুজিতের অবশ্য প্রতিক্রিয়া, “বিরোধীরা ভাল কিছু দেখতে পান না।”
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পঞ্চায়েতের মোট ১২টি মৌজায় জল সরবরাহ করা হয়। দু’-একটি জায়গায় সমস্যা হচ্ছে। বিকল্প হিসাবে হেতেডোবায় একটি জলাধার গড়ে তোলা হবে। সেটি সম্পূর্ণ হলেই, সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়ে যাবে বলে দাবি।