খাঁ-খাঁ করছে পূর্ব খাপুরে জ্যোতিপ্রিয়ের পৈতৃক বাড়ি। — নিজস্ব চিত্র।
দেশকে স্বাধীন করতে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন পূর্ব বর্ধমানের কালনার মন্তেশ্বরের বামুনিয়া পঞ্চায়েতের পূর্ব খাঁপুর গ্রামের শক্তিপদ মল্লিক। সেই স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবারের ছেলে রাজ্যের দাপুটে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হয়েছেন রেশন বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগে। গ্রামের ছেলে ‘বালুদা’র ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় মনখারাপ পূর্ব খাঁপুর গ্রামের বাসিন্দাদের।
শুক্রবার সকালে গ্রামবাসী এবং জ্যোতিপ্রিয়ের আত্মীয়রা টিভির পর্দায় দেখতে পান, তাঁদের বালুদা গ্রেফতার হয়েছেন! এই খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত। গ্রামের বাসিন্দা বিকাশ মণ্ডল, জিতেন দাসরা সমস্বরে জানাচ্ছেন, জ্যোতিপ্রিয় গ্রামের উন্নয়ন করেছেন প্রচুর। রাস্তাঘাট, আইটিআই, জল প্রকল্পও গ্রামে এসেছে বালুর জন্যই।
বরাবরের সম্পন্ন মল্লিকরা। কিন্তু গত কয়েক বছরে সেই সম্পত্তি দ্বিগুণ বেড়েছে এটাও অবশ্য ঠারেঠোরে স্বীকার করে নিচ্ছেন গ্রামবাসীদের একটি অংশ। পাশাপাশিই তাঁরা জানাচ্ছেন, নিজেদের দেশের বাড়িতে খুব বেশি আসতে দেখা যেত না মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়কে। মাঝেমধ্যে এসে দাদার সঙ্গে দেখা করতেন। কিন্তু এখন পরিবারের সকলেই কলকাতার বাসিন্দা। এখানে কেউ থাকেন না। এখানে শুধু একলা দাঁড়িয়ে রয়েছে মল্লিকদের ভিটেবাড়িটি। বিরোধীদের যদিও অভিযোগ, গ্রামে নামে-বেনামে প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে মন্ত্রীর এবং তাঁর পরিবারের। তার অবশ্য এখনও আনুষ্ঠানিক সত্যতা জানা যায়নি।
বিজেপি নেতা ঝুলন হাজরার অভিযোগ, পূর্ব খাঁপুর গ্রামে রয়েছে মন্ত্রীর পেল্লায় আকারের একটি বাড়ি। সিসিটিভি ক্যামেরায় মোড়া বাড়ির লাগোয়া রেশন দোকান। এই রেশন দোকানটি মন্ত্রীর এক ভাইয়ের নামে। মন্ত্রী নিজের প্রভাব খাটিয়ে নিজের পরিবারের সদস্যদের নামেও রেশন দোকান-সহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দিতে পিছপা হননি বলে অভিযোগ বিরোধীদের।
সিপিএম নেতা ওসমান গনি সরকার বলেন, ‘‘মন্তেশ্বরের বামুনপাড়া এলাকায় একটি আইটিআই রয়েছে মন্ত্রীর ভাইয়ের নামে। কলেজটি বেশ কয়েক বিঘা জমির উপর দাঁড়িয়ে আছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির হানাদারি শুরু হতেই কলেজের সাইনবোর্ডটিতে বিশেষ কিছু অংশ কালো রং দিয়ে মুছে দেওয়া হয়েছে।’’