—প্রতীকী চিত্র।
ভোট এলেই ব্যস্ততা বাড়ত তাঁর। দেওয়াল লেখা, বাড়ি-বাড়ি গিয়ে প্রচারে নেমে পড়তে হত। এ বছর পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাঁর নামে তৈরি শহিদ বেদিতে দলের নেতারা মালা দিচ্ছেন। কালনা ২ ব্লকের আটকেটিয়া গ্রামের দয়াল হাজরার ছেলে আশিস হাজরা বলেন, ‘‘আমার বাবার মতো আর কেউ যেন রাজনৈতিক হিংসার বলি না হন।’’
২০২২ সালের ২৮ জুলাই গ্রামের বুড়োশিবতলায় দেহ মেলে বছর বিয়াল্লিশের দয়ালের। মা ছবি হাজরার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ স্থানীয় এক বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করে। হাজরা পরিবারের মাটির বাড়ি থেকে কয়েক পা এগোলেই গোপালদাসপুর মোড়। সেখানে সাদা-কালো পাথরে দয়াল হাজরার স্মৃতিস্তম্ভ। সম্প্রতি এখানে মালা দিয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কাছে কান্নায় ভেঙে পড়েন বৃদ্ধা ছবি হাজরা।
বছর কুড়ির আশিস জানান, বাবার মৃত্যুর পরে সংসারে অভাবের কথা জানিয়ে কাজের আবেদন করেছিলেন। পর দিনই আর্থিক সাহায্য পাঠিয়েছিলেন অভিষেক। আশিসের কথায়, ‘‘আশা করছি একটা কাজও মিলবে।’’ তিনি নিজেও শাসক দলের বুথ কমিটির সদস্য। তাঁর কথায়, ‘‘টিভি খুললেই রাজনৈতিক হানাহানির খবর দেখা যায়। চাই না আর কেউ রাজনীতির কারণে পিতৃহারা হোক।’’ তিনি জানান, বাবার মৃত্যুর পরে ঠাকুমা চুপচাপ হয়ে গিয়েছেন। ঘরে বাবার ছবি নিয়ে চোখের জল ফেলেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সৈকত পুজারি, শ্রীমন্ত কিস্কু, রণজিৎ সিংহ, শ্যামসুন্দর মালিকেরা বলেন, ‘‘রাজনীতিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন দয়াল। তাই প্রাণ দিতে হয়। আমরা চাই না, গ্রামের আর কেউ রাজনীতির বলি হোক।’’ কালনা ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রণব রায় বলেন, ‘‘আমরা পরিবারটির পাশে রয়েছি।’’ জেলা বিজেপি (কাটোয়া) সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, অরাজনৈতিক ঘটনায় রাজনীতির রং দিয়েছে তৃণমূল।