ক্ষোভ: সার দিয়ে দাঁড়িয়ে কয়লাবোঝাই ট্রাক। সামনে বিক্ষোভ। অন্ডালের বনবহাল মোড়ে। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।
চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভের জেরে খনিতে উৎপাদন বন্ধ থাকল বেশ কয়েক ঘণ্টা। বন্ধ ছিল পরিবহণও। মঙ্গলবার ইসিএলের সালানপুরের বনজেমাহারি কোলিয়ারির ঘটনা। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ ছাড়া জেলার আরও কয়েকটি খনিতেও বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে।
খনি সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকাল থেকে কাজ যাওয়া ঠিকা সংস্থার শতাধিক নিরাপত্তারক্ষী খনিতে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অভিযোগ, বিক্ষোভের জেরে বন্ধ করে দিতে হয় উৎপাদন। কয়লাবোঝাই ট্রাক খনি থেকে বেরোতে গিয়েও বাধা পায়। এই অবস্থায় কোলিয়ারির এজেন্ট নীরজ সিংহ ঘটনাস্থলে আসেন এবং বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। খনি সূত্রে জানা যায়, তিনি বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, কয়লা পরিবহণ বন্ধ থাকলে রাজ্যের বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রভাব পড়তে পারে। কারণ এই কয়লা রাজ্যের বিভিন্ন তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা জানিয়ে দেন, কাজ না ফিরে পেলে বিক্ষোভ চলবে। এর খানিক বাদে সালানপুর থানার পুলিশ ও শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। এর পরে লাঠি উঁচিয়ে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। দুপুর একটা নাগাদ খনির উৎপাদন এবং কয়লা পরিবহণ স্বাভাবিক হয়।
ইসিএল সূত্রে জানা যায়, সংস্থার ৯৪টি কয়লা খনি পাহারা দেওয়ার জন্য ২২৬৮ জন নিরাপত্তারক্ষী কাজ করতেন। গত ১ জুলাই থেকে তাঁরা কর্মহীন। যে ঠিকা সংস্থার অধীনে ওই কর্মীরা কাজ করতেন, সেই সংস্থার মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে বলে ইসিএল জানায়। নতুন করে ওই সংস্থা বা অন্য কোনও ঠিকা সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হয়নি। এই অবস্থায় কাজ হারানো ঠিকা নিরাপত্তারক্ষীরা ফের কাজে বহালের দাবিতে বেশ কিছু দিন ধরেই আন্দোলন শুরু করেছেন।
কাজে পুনর্বহালের দাবিতে ইসিএলের কেন্দা এরিয়া, শোনপুরবাজারি, সাতগ্রাম এরিয়াতেও পরিবহণ আটকে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিক্ষোভ যোগ দেওয়া একটি সংগঠনের নেত্রী সুদীপ্তা পাল দাবি করেন, ‘‘শোনপুরবাজারি এবং কেন্দায় বিক্ষোভ তুলতে এসে পুলিশ জানায়, ১৫ জানুয়ারি থেকে ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের পুনর্নিয়োগ করা হবে।’’ ইসিএলের এক আধিকারিক অবশ্য জানান, কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রকের সিদ্ধান্ত, খনি নিরাপত্তার কাজে প্রাক্তন সেনাকর্মীদেরই একমাত্র নিয়োগ করা হবে।