জমাট বাঁধা সিমেন্ট দেখাচ্ছেন এলাকাবাসী। নিজস্ব চিত্র
নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে শিশুশিক্ষা কেন্দ্র (এসএসকে) তৈরির অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিলেন গ্রামবাসীর একাংশ। বুধবার দুপুরে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের পাড়াতল ২ পঞ্চায়েতের ইলামপুর গ্রামের ব্রাহ্মণপাড়ায় ওই শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের ছাদের ঢালাই দেওয়ার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্থানীয় লোকজনের দাবি, কাজের ‘শিডিউল’ প্রকাশ্যে টাঙাতে হবে। পড়ুয়াদের জীবন সংশয় হতে পারে, এমন নির্মাণ কাজ করতে দেওয়া হবে না বলেও তাঁদের দাবি। প্রশাসনের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে জট ছাড়ানোর দাবিও করেছেন তাঁরা।
জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান বলেন, ‘‘নিম্ন মানের কাজ করার জন্য ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার আগে নিয়মনীতি মেনে ঠিকাদারকে শিশুশিক্ষা কেন্দ্রটি তৈরি করে দিতে হবে।’’ এ ব্যাপারে ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন ব্লকের কর্তারা। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির আরও দাবি, নতুন করে ঢালাইয়ের কাজ না করলে ঠিকাদার সংস্থার বরাদ্দ অর্থ আটকে দেওয়া হবে। এলাকার বাসিন্দা সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, অভি বন্দ্যোপাধ্যায়দের অভিযোগ, ‘‘দু’মাস আগে আমাদের পাড়ায় এসএসকে তৈরি শুরু হয়। প্রথম থেকেই কাজে বেনিয়ম হচ্ছে, বুঝতে পারছিলাম। ঠিকাদারকে ঠিক পরিমাপে কাজ করার জন্য বলা হয়েছিল। একই সঙ্গে কী ভাবে কাজ করা হবে, তার নির্দেশিকা বা শিডিউল টাঙানোর কথা বলা হয়। কিন্তু আমাদের কথা ঠিকাদার বা প্রশাসন কেউ শোনেননি।’’ গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, বিদ্যুৎ চুরি করে নির্মাণ কাজ করা হচ্ছিল।
তন্ময় ঘোষ-সহ একাধিক বাসিন্দার অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুরে এসএসকে-র ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়। জমাট বাঁধা ‘নিম্ন মানের’ সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই হয়। কাজ খতিয়ে দেখার কথা ইঞ্জিনিয়ারের। কিন্তু তিনি আসেননি। ‘বিম’ জমাট বাঁধার কাজ শেষ হতেই বুধবার গ্রামবাসীরা একজোট হয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। তাঁদের দাবি, ওই সিমেন্ট এবং নিম্ন মানের অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে কাজ করলে ভবনটি ভেঙে পড়তে পারে। পড়ুয়াদের দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হবে সে ক্ষেত্রে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতর ও একশো দিনের কাজের প্রকল্প থেকে এসএসকেটি তৈরি। এ দিন বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েন ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ার শেখ নাসিরুল। তবে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তাঁরা কেউই।