সেপটিক ট্যাঙ্কে নেমে মৃত্যু। প্রতীকী চিত্র।
শৌচকর্মের সময় অসাবধানতাবশত পকেট থেকে টাকার বান্ডিল পড়ে চলে গিয়েছিল সেপটিক ট্যাঙ্কে। সেই টাকা উদ্ধারে সেপটিক ট্যাঙ্কে নেমে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের দুই ভাইয়ের মৃত্যু হল কেরলে। সোমবার মৃত্যু হয়েছে ওই দুজনের। সেই খবর ভাতারের বাড়িতে পৌঁছতেই শোকের ছায়া নেমেছে এলাকায়।
মৃতদের নাম আলকাস শেখ (৩২) এবং আশরাফুল শেখ ওরফে বচ্চন (২৯)। সোমবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পেরেছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার কেরলেই দেহদুটির ময়নাতদন্ত করানোর পর গ্রামে আনা হবে বলে জানা গিয়েছে।
ভাতারের এরুয়ার গ্রামের বাসিন্দা আলকাস এবং আশরাফুলের। আলকাস, আফরাফুল এবং তাঁর আরও এক ভাই সঞ্জীব শেখ কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। তাঁদের বড় দাদা রূপচাঁদ শেখ বাড়িতে থাকতেন। কেরলের মলপ্পূরম জেলার ত্রিশূল এলাকায় অন্যান্য পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গেই তারা একটি ডেরায় থাকতেন। সঞ্জীব জানিয়েছেন,সোমবার কাজ থেকে ফিরে তিনি শৌচকর্মে গিয়েছিলেন। সেইসময় আলকাস এবং আশরাফুল রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। সঞ্জীবের অন্তর্বাসের পকেটে একটি প্যাকেটের মধ্যে রাখা ছিল ১৪ হাজার ৮০০ টাকা। শৌচকর্ম সেরে জল ঢালার পর সঞ্জীব দেখেন তাঁর টাকার বান্ডিল প্যানে পড়ে সেপটিক ট্যাঙ্কে চলে গিয়েছে। এর পর বিষয়টি ভাইদর জানানোর পর, তিন জন মিলে শাবল দিয়ে ওই সেপটিক ট্যাঙ্কের ঢাকনা খোলেন। তখন তাদের নজরে পড়ে পলিথিন মোড়ানো বান্ডিলটি ভাসছে। সঞ্জীব মোবাইলে জানিয়েছেন, এর পর ট্যাঙ্কে মই নামিয়ে টাকা উদ্ধারে নামেন আলকাস। টাকার গোছা নিয়ে মই বেয়ে ওঠার সময়েই তিনি হঠাৎ পড়ে তলিয়ে যান ওই ট্যাঙ্কে। তা দেখে আশরাফুল দাদাকে উদ্ধার করতে নিচে নামেন। তিনিও একই ভাবে তলিয়ে যান। দুই ভাইকে পড়ে যেতে দেখে সঞ্জীবও নামতে যান। কিন্তু তাঁকে অন্যান্যরা আটকে দেন।
বিষয়টি জানানো হয় পুলিশকে। পুলিশ এবং দমকলবাহিনী এসে দুজনকে উদ্ধার করে। চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। আচমকা দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকে পাথর ভাতারের গোটা পরিবার।