চতুরঙ্গ পুজো কমিটি। নিজস্ব চিত্র
বনের পাখি বলে, ‘না, আমি শিকলে ধরা নাহি দিব।’ খাঁচার পাখি বলে, ‘হায়, আমি কেমনে বনে বাহিরিব।’ খাঁচায় বন্দি পাখির এই জীবন-যন্ত্রণাই ফুটে উঠেছে অম্বুজার ঊর্বশী সর্বজনীনের পুজোয়। অন্য দিকে, ‘মায়া সভ্যতা’কে টেক্কা ধরে পুজো-ময়দানের দখল নিতে চাইছে চতুরঙ্গ পুজো কমিটি। দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের এই দুই বড় পুজোর উদ্বোধন হল রবিবার সন্ধ্যায়।
ঊর্বশী সর্বজনীনের পুজো এ বার ১৪ বছরে পড়ল। তাদের থিম ‘খাঁচার পাখি, বনের পাখি’। কৃত্রিম জঙ্গলের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। বনের পাখি হিসেবে দেখানো হয়েছে শত-শত কৃত্রিম পাখি। তবে খাঁচার পাখিগুলি আসল। পুজো কমিটির সম্পাদক রতন মুখোপাধ্যায় জানান, ‘‘বন দফতরের অনুমতি নিয়ে কলকাতা থেকে প্রায় আটশো পাখি আনা হয়েছে।’’ কাঁথির বাসিন্দা চঞ্চল আচার্য প্রায় দু’মাসের চেষ্টায় থিমটিকে বাস্তব রূপ দিয়েছেন। থিমের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে প্রতিমা গড়েছেন কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির বিকাশ পাল। পুজোর বাজেট প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। থিম প্রসঙ্গে পুজো কমিটির সভাপতি দুলাল মিত্র জানান, ‘‘বন্যেরা বনে সুন্দর। সে কথাই ফের মনে করিয়ে দিতে চাই আমরা।’’
ঊর্বশী সর্বজনীনের মণ্ডপ। নিজস্ব চিত্র
দক্ষিণ-পূর্ব মেক্সিকো ও উত্তর-মধ্য আমেরিকায় গড়ে উঠেছিল ‘মায়া সভ্যতা’। পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতার অন্যতম এটি। জ্যোতির্বিজ্ঞান ও শল্য চিকিৎসার নানা খুঁটিনাটি বিষয়ে এই সভ্যতার উৎকর্ষ চমকে দিয়েছে ইতিহাসবিদদের। কলকাতার সরকারি আর্ট কলেজের প্রাক্তনী সুব্রত চঞ্চল দে প্লাইউড, থার্মোকল, রঙ ও তুলির টানে এক টুকরো মায়া সভ্যতা হাজির করেছেন চতুরঙ্গ পুজো কমিটির মণ্ডপে। মানানসই প্রতিমা গড়েছেন বেনাচিতির মৃৎশিল্পী অরুণ পাল। পুজো কমিটির সম্পাদক নীলাঞ্জন রায়চৌধুরী জানান, এ বার পুজোর ৩০তম বর্ষ। পুজোর চার দিনই রয়েছে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।