মন্তেশ্বরে বিজয়া সম্মিলনী বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।
ব্লক সভাপতির ডাকা বিজয়া সম্মিলনীর আগেই তৃণমূলের আরও একটি বিজয়া সম্মিলনী হয়ে গেল মন্তেশ্বরে। দু’দিনের ব্যবধানে দু’বার একই অনুষ্ঠান কেন, উঠেছে সেই প্রশ্ন। বিরোধীদের ও দলের একাংশ কর্মীদের দাবি, মন্তেশ্বরের তৃণমূল বিধায়কের গোষ্ঠীর সঙ্গে দলের অন্য গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব আগেও প্রকাশ্যে এসেছে। বিজয়া সম্মিলনীতেও দু’পক্ষ পৃথকই। যদিও দ্বন্দ্বের কথা মানেনি তৃণমূল।
দিন কয়েক আগেই মন্তেশ্বরের ব্লক তৃণমূল সভাপতি আজিজুল হক শনিবার, ২২ অক্টোবর বিজয়া সম্মিলনী করার কথা ঘোষণা করেন। দলীয় নেতৃত্ব ও কর্মী-সমর্থকদের যোগদানের আহ্বান জানিয়ে মন্তেশ্বর বাজারে তোরণও তৈরি হয়। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আহমদ হোসেন শেখের ডাকে ব্লক তৃণমূল, যুব তৃণমূল, মহিলা তৃণমূল ও শ্রমিক সংগঠন মিলে বিজয়া সম্মিলনী করা হয়। কুসুমগ্রাম বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে এ দিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি রাসবিহারী হালদার, জয় হিন্দ বাহিনীর জেলা সভাপতি রবিন নন্দী, জেলা মহিলা তৃণমূল সভাপতি শিখা দত্ত, জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলামেরা। মঞ্চে দেখা গিয়েছে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, ব্লক যুব সভাপতি, শ্রমিক সংগঠন ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতাদেরও। তবে ব্লক তৃণমূল সভাপতি আজিজুল হক বা সহ-সভাপতি দেবপ্রিয় যশকে দেখা যায়নি অনুষ্ঠানে। আহমেদ হোসেন শেখের দাবি, ‘‘মন্তেশ্বরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর নির্দেশ ছিল, একটি বিজয়া সম্মিলনী করার। সেই নির্দেশেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন।’’ শনিবারের বিজয়া সম্মেলনী নিয়ে তাঁর জানা নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি। আজিজুলও এ দিনের অনুষ্ঠান নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
কিছুদিন আগে আজিজুল হকের নাম পুনরায় ব্লক সভাপতি হিসেবে ঘোষণার পরে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর প্রায় ন’মিনিটের একটি ভিডিও বার্তা ছড়িয়ে পড়ে (যার সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি)। সেখানে তিনি দাবি করেন, মন্তেশ্বরের ব্লক তৃণমূল সভাপতি হিসেবে আজিজুল হকের নির্বাচন ঠিক হয়নি। মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আহমেদ হোসেন শেখ ব্লক সভাপতি হওয়ার যোগ্য লোক বলেও দাবি করেন তিনি। ওই ঘটনার পর থেকে দলের দ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দেয়। দুর্গাপুজোর নবমীর দিনও দলের কর্মীদের মধ্যে অশান্তি বাধে। বেশ কয়েকজন আহত হন।
ব্লক তৃণমূল সভাপতি আজিজুল হকের দাবি, ‘‘অঞ্চল সভাপতি, শাখা সংগঠন-সহ দলের সব স্তরের নেতৃত্বকে শনিবারের বিজয়া সম্মিলনীর আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’’ মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি।
বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ পোদ্দারের কটাক্ষ, ‘‘বিষয়টা তৃণমূলের নিজেদের মধ্যে ক্ষমতা জাহির করার লড়াই। এটাই ওদের সংস্কৃতি।’’ যদিও রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডুর দাবি, ‘‘আমাদের কাছে খবর রয়েছে, মন্তেশ্বরে এ দিন যুব তৃণমূলের কর্মসূচি ছিল। সেই কারণে জেলা যুব সভাপতি উপস্থিত ছিলেন। ভুলবশত হয়ত ব্যানারে ব্লক তৃণমূল লেখা থাকতে পারে।’’