উৎসবের উদ্বোধন। —নিজস্ব চিত্র।
সাত মাস আগেই কালনার খেয়াঘাটে নৌকাডুবির ঘটনায় ভাগীরথীতে তলিয়ে গিয়ে বর্ধমান ও নদিয়ার প্রায় কুড়ি জনের মৃত্যুর ঘটনা এখনও টাটকা। তার পরে যাত্রীসুরক্ষা, নিরাপদে পণ্য পরিবহণে জোর দিতে ‘রোরো স্টিমার সার্ভিস’ চালুর কথা জানাল রাজ্য সরকার। বুধবার কালনায় পর্যটন উৎসবে যোগ দিতে এসে পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এই ঘোষণা করেন।
শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘এ বছরেই বর্ধমানের কালনা ও নদিয়ার নৃসিংহপুরঘাট এবং পূর্ব মেদিনীপুরের কুকড়াহাটি ও রায়চকে রোরো সার্ভিস চালু হবে।’’ উন্নত প্রযুক্তির জেটিও তৈরি হবে বর্ধমান ও নদিয়ায়। গোটা পরিকাঠামো তৈরির জন্য ১২ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। এ ছাড়া কালনায় ৫০ লাখ টাকা খরচে একটি জেটি সংস্কার করা হয়েছে বলে প্রশাসনের কর্তাদের দাবি। নৃসিংহপুরঘাটের জেটির জন্য বরাদ্দ হয়েছে এক কোটি টাকা। এ ছাড়াও কালনায় ভাগীরথীর ঘাট, ফুটপাথের সৌন্দর্যায়নের জন্য বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুকে প্রস্তাব পাঠানোর জন্য বলেন শুভেন্দুবাবু।
পর্যটন উৎসবের উদ্বোধনী মঞ্চে থেকেই মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ পরিবহণ মন্ত্রীর কাছে কালনা থেকে রাজ্যের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বাস চালু করার প্রস্তাব দেন। এর পরেই শুভেন্দুবাবু জানান, কালনা-দিঘা রুটে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার একটি বাস চালানো হবে।
এ দিন মঞ্চে উপস্থিত পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব দাবি করেন, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পর্যটনকেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো উন্নতির জন্য কাজ শুরু হয়েছে। বর্ধমান জেলায় ইতিমধ্যে বরাদ্দ হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা। সেই টাকায় মাইথন, দুর্গাপুর-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়নের কাজ চলছে বলে তাঁর দাবি। জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে কালনা-সহ জেলার বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রগুলি তিনি নিজে ঘুরে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস গৌতমবাবুর।
পর্যটন উৎসব উপলক্ষে প্রায় ৫০টি স্টল বসেছে। উৎসব চলবে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত। জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, রূপম ইসলাম, অনিক, মুম্বইয়ের আকৃতি কাকরের মতো শিল্পীরা উৎসবে অনুষ্ঠান পরিবেশন করবেন বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। উৎসব কমিটির আহ্বায়ক বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মানচিত্রে কালনাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতেই এই আয়োজন।’’