মদ খেয়েই মৃত্য়ু একের পর এক মানুষের? প্রতীকী চিত্র।
মদ্যপান করে মৃত্যুর অভিযোগে উত্তাল বর্ধমান শহর। ওই ঘটনায় মৃত্যু হল আরও দু’জনের। তিন দিনে এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আটে।
সূত্রের খবর, বর্ধমানের খাগড়াগড় পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা মীর মেহবুব ওরফে বাপ্পা এবং বাপন শেখ নামে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এঁরা দু’জনেই বর্ধমানের কলেজ মোড় এলাকার একটি হোটেল থেকে মদ পান খেয়েছিল বলে দাবি পরিবারের। বৃহস্পতিবার ওই হোটেল থেকে মদ খাওয়ার পরেই তাঁরা অসুস্থ বোধ করেন। ক্রমাগত বমি করতে থাকেন। সেই সঙ্গে ছিল তীব্র পেটের যন্ত্রণা।
মীর মেহবুবকে ভর্তি করানো হয়েছিল বর্ধমান হাসপাতালে। বাপন শেখকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় দু’জনের। তিন দিনে আট জনের মৃত্যুতে পুলিশ এবং আবগারি দফতরের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলছেন খাগড়াগরের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, সঠিক নজরদারি থাকলে এমন ঘটনা হতই না। কী ভাবে ভাতের হোটেলে মদ হত এ নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সেখ ফিরোজের দাবি, ‘‘ওই হোটেলে মদ খেয়েই মৃত্যু হয়েছ খাগড়াগড়ের দুই বাসিন্দার। ওই দোকানের মেয়াদ উত্তীর্ণ মদপান করেই এই ঘটনা বলে অনুমান ।
অন্য দিকে, পুলিশ জানিয়েছে ওই হোটেলের মালিকের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেছে তারা। তবে গণেশ পাসওয়ান নামে ওই হোটেল মালিক অসুস্থ থাকায় এখনই তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে মদ বিক্রির মামলা করা হয়েছে। কিন্তু মদের বিষক্রিয়াতেই কি মৃত্যু হয়েছে?
বর্ধমানের দুটি মদের দোকানের একটি বিশেষ ব্যাচের মদের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল কলকাতায়। সদ্য তার রিপোর্ট হাতে পেয়েছে জেলা প্রশাসন। তাতে জানানো হয়েছে, মদে কোনও ভেজাল ছিল না। তবে ওই হোটেলেই মদ কোনও ভাবে বিষাক্ত হয়েছিল কিনা সেটা তদন্তসাপেক্ষ।
ইতিমধ্যে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী তরজা। বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের মন্তব্য, ‘‘আশঙ্কাই সত্যি হল। রিপোর্ট গরমিল হতে পারে সেটা আগেই দাবি করেছিলাম। এখন হোটেলকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে।’’ প্রায় একই অভিযোগ কংগ্রেস নেতা গৌরব সমাদ্দারেরও। তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসন ও শাসক দলের মদতেই অবৈধ মদের কারবার রমরমিয়ে চলছে।’’ যদিও বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, ‘‘প্রশাসন তদন্ত শুরু করছে। কিন্তু শুধু বিরোধিতা করাই যদি কারও লক্ষ্য হয়ে থাকে, তাতে আর কী বলার থাকতে পারে। প্রশাসন তো ঘটনার পর দ্রুত তদন্ত শুরু করেছে।’’