সঙ্কটে সিমেন্ট শিল্প

প্রতিযোগিতায় টিকতে বরাত বাড়ানোর দাবি

প্রতিযোগিতার বাজারে বহুজাতিক সংস্থাগুলির সঙ্গে টিকে থাকতে আরও বেশি পরিমাণে সরকারি বরাতের দাবি জানালেন রাজ্যের ছোট ও মাঝারি সিমেন্ট শিল্পদ্যোগীরা। সম্প্রতি সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারর্স অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভায় এই দাবিতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কাছে এই আবেদন জানানো হবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৬ ০৭:৩৫
Share:

প্রতিযোগিতার বাজারে বহুজাতিক সংস্থাগুলির সঙ্গে টিকে থাকতে আরও বেশি পরিমাণে সরকারি বরাতের দাবি জানালেন রাজ্যের ছোট ও মাঝারি সিমেন্ট শিল্পদ্যোগীরা। সম্প্রতি সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারর্স অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভায় এই দাবিতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কাছে এই আবেদন জানানো হবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

Advertisement

অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে, বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কয়েকশো মাঝারি ও ছোট সিমেন্ট করাখানা রয়েছে। এই সব কারখানাগুলির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে লক্ষাধিক মানুষের জীবিকা নির্ভর করে। অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি পবন গুটগুটিয়ার দাবি, ‘‘আমাদের কারখানাগুলিতে উৎপাদিত সিমেন্ট বাজারে বিক্রি করতে গিয়ে বহুজাতিক সংস্থাগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পড়তে হচ্ছে। এর জেরে বাজারে টিকে থাকায় দায় হয়ে পড়েছে।’’ কারখানা মালিকদের দাবি, বিভিন্ন কারখানা লোকসানে চলছে। কিন্তু সাধারণ শ্রমিকদের কথা ভেবে কারখানার ঝাঁপ ফেলাও সম্ভব হচ্ছে না।

এই পরিস্থিতিতে সিমেন্ট-শিল্পের হাল ফেরাতে বেশি পরিমাণে সরকারি বরাতের দাবি জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন। পবনবাবুর দাবি, ‘‘রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছি, সরকারি নির্মাণ কাজে আমাদের আইএসআই মার্ক যুক্ত সিমেন্ট আরও বেশি করে বরাত দেওয়া হোক। একমাত্র তাহলেই আমরা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারব।’’ বার্ষিক সাধারণ সভায় উদ্যোগপতিরা একটি হিসেব দিয়ে জানান, গত কয়েক বছরে দুই সরকারে তরফে যে পরিমাণ পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ হয়েছে, তাতে সিমেন্টের চাহিদা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। কিন্তু সিমেন্ট জোগানের ক্ষেত্রে বহু ঘাটতি রয়েছে বলে উদ্যোগপতিদের দাবি। পবনবাবুদের দাবি, রাজ্যের মাঝারি ও ছোট সিমেন্ট শিল্পোদ্যোগীদের কাছ থেকে সিমন্ট নেওয়া হলে চাহিদা ও জোগানের ফারাক রোখা যাবে।

Advertisement

সিমেন্ট-শিল্পের হাল ফেরাতে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রশাসনিক পদক্ষেপেরও দাবি জানানো হয়েছে ওই সভায়। যেমন, শিল্পোদ্যোগীদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব এই শিল্পে গুডস অ্যান্ড সার্ভিস ট্যাক্স (জিএসটি) লাগু করা হোক। শিল্পপতিদের অভিযোগ, কারখানা চালাতে গিয়ে অনেক সময়েই দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অহেতুক বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে।

এই বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মন্ত্রীর কাছে প্রতিনিধি পাঠিয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানান অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, ‘‘ওই সংগঠনের তরফে বিষয়টি আমাকে জানানো হলে গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।’’

এর আগে আসানসোল পুরসভা এলাকায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগীদের কর শিথিলের দাবি তুলেছিল দক্ষিণবঙ্গের ন’টি জেলার সমন্বয়ে গঠিত ফেডারেশন অফ সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। সংগঠনের কার্যকরি সভাপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ খেতান জানান, সম্প্রতি পুর-কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত পরিমাণে হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স কর বাড়িয়েছেন। এর জেরে ফলে এলাকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগীরা সমস্যায় পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে শহরের মেয়রের কাছে আবেদন করা হয়েছে।’’

আসানোসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘ওনাদের দাবির কথা বিবেচনার মধ্যে রাখা হয়েছে। যতটা সম্ভব কর-ব্যবস্থা শিথিল করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement