রাশ আলগা করতে নারাজ তৃণমূল

সামান্য উপনির্বাচনেও হেভিওয়েট নেতাদের ভিড়। প্রতিদিনই রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রী, খেলার মাঠের তারকারা প্রচারে আসছেন। জোরকদমে চলছে মিটিং-মিছিল-চাটাই বৈঠক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেমারি শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০০:১২
Share:

সামান্য উপনির্বাচনেও হেভিওয়েট নেতাদের ভিড়।

Advertisement

প্রতিদিনই রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রী, খেলার মাঠের তারকারা প্রচারে আসছেন। জোরকদমে চলছে মিটিং-মিছিল-চাটাই বৈঠক। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাই জানাচ্ছেন, মন্তেশ্বরের উপনির্বাচনে বিজেপি-র পতাকা চোখে পড়লেও সিপিএমের উপস্থিতি সে ভাবে টেরই পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু তারপরেও এতটুকু ফাঁক দিতে নারাজ তৃণমূলের নেতারা। কেন?

তৃণমূলের অন্দরের খবর, কয়েক মাস আগে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী সজল পাঁজা মাত্র সাতশো ছয় ভোটে জিতেছিলেন। এ বার তাঁর ছেলে সৈকতকে জেতানোর জন্য ২৫ হাজার ভোটের ‘টার্গেট’ নিয়েছেন নেতারা। তার উপর মন্তেশ্বর বিধানসভার ১৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে মেমারি ব্লকের সাত পঞ্চায়েতে তৃণমূলের ব্যবধান ভাল থাকলেও, মন্তেশ্বরের ১০ ব্লকে লড়াই ছিল হাড্ডাহাড্ডি। এ বার তাই দু’দিন থেকেই জয়ের মার্জিন বাড়াতে চাইছেন নেতারা।

Advertisement

তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যাচ্ছে বড় মাত্রায় জয়ের পিছনে চারটি লক্ষ্য রয়েছে তাঁদের। এক, বিধানসভা নির্বাচনের সময় তৃণমূল জাতীয় দল হয়নি। কিন্তু উপনির্বাচনেও ভোটের শতকরা হার বাড়িয়ে রাখতে চাইছে দল। দুই, বিধানসভায় বিপুল জয়ের পরে ব্যবধান ‘ঠিকঠাক’ না হলে বিরোধীরা খোঁচা দেওয়ার সুযোগ পেয়ে যাবে। তিন, নির্বাচন মানেই লড়াই। সেখানে অন্য দলের উপস্থিতি টের পাওয়া যাক বা না যাক। লড়াই জেগে থাকলে দলের কর্মীরাও উজ্জীবীত থাকবেন।

রাজ্য স্তরের এক তৃণমূল নেতার দাবি, “আমরা ছাড়া এ বঙ্গে আর কোনও রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব যে বাস্তবে নেই সেটা বোঝানোর জন্যে আমরা এই উপনির্বাচনকে বেছে নিয়েছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ একটা কথা মনে রাখা দরকার, বর্ধমান হল এক সময়ের লাল দুর্গ। ফলে একটু জল-বাতাস পেলেই দুর্গের গায়ে লেগে থাকা লতা-পাতা ঠিক দাঁড়িয়ে যাবে।” আর এক প্রবীণ নেতাও বলেন, “এই উপনির্বাচনে সামান্যতম লড়াইয়ের মুখে পড়লেই ধীরে ধীরে তা অন্য কেন্দ্রে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে যায়। সব দিক থেকেই বড় ব্যবধানে জয় প্রয়োজন। দলের কর্মীদের উজ্জীবিত করতেই প্রভাবশালী মন্ত্রী, নেতাদের মন্তেশ্বরের মাঠে নামাতে হয়েছে।” সে দলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মুকুল রায় থেকে জেলার মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, মলয় ঘটক থেকে অরূপ বিশ্বাস সবাই আছেন। শুধু সভায় নয়, হুডখোলা জিপেও নেতা-মন্ত্রীরা ঘুরে প্রচার চালাচ্ছেন। এমনকী, মেমারির সাতগেছিয়া ও মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে পদযাত্রা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের পর্যবেক্ষক। এ ছাড়াও বিভিন্ন সভায় শাসক দলের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য প্রচার চালিয়েছেন প্রাক্তন ভারতীয় ফুটবলার প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌতম সরকারেরা। দেখা গিয়েছে তীরন্দাজ দোলা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। এ ছাড়া প্রচারের প্রাথমিক স্তরে গ্রামীণ চিকিৎসক, আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদেরও পথে নামিয়েছে তৃণমূল।

দলের জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের দাবি, “আমরা তো একটা পরিবার। তাই তো সবাই মিলে ঝাঁপিয়ে পড়েছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement