Asansol Tragedy

মৃতদের বাড়ি যাননি কেন জিতেন্দ্র, তোপ

বৃহস্পতিবার পদপিষ্ট হয়ে মৃত ঝালি বাউরির আসানসোল জেলা হাসপাতালে দেহের ময়না-তদন্ত করানো হয়। সেখানে দাঁড়িয়েই আয়োজকদের লক্ষ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ঝালির পুত্রবধূ পূর্ণিমা বাউরি।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:৩১
Share:

আসানসোলে আদালতে আনা হল ধৃতদের। শুক্রবার। ছবি: পাপন চৌধুরী

কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। বুধবার আসানসোলের রামকৃষ্ণডাঙালের ওই ঘটনার পরে, কেটে গিয়েছে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা। কিন্তু শুক্রবার রাত পর্যন্ত ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক, বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও তাঁর স্ত্রী তথা ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারি মৃতদের বাড়িতে যাননি। এমন অভিযোগ উঠেছিল মৃতদের পরিবারগুলির একাংশের তরফে। পাশাপাশি, এ বিষয়ে তোপ দেগেছে তৃণমূলও। যদিও, বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন। দলীয় ভাবে গোড়া থেকেই তাঁরা মৃতদের পরিবারগুলির পাশে রয়েছেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার পদপিষ্ট হয়ে মৃত ঝালি বাউরির আসানসোল জেলা হাসপাতালে দেহের ময়না-তদন্ত করানো হয়। সেখানে দাঁড়িয়েই আয়োজকদের লক্ষ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ঝালির পুত্রবধূ পূর্ণিমা বাউরি। তাঁর অভিযোগ, “আয়োজকদের কেউ আমাদের খোঁজ রাখেননি।” ঘটনার বিচার চান, জানিয়েছেন সুখেন বাউরি। তবে অন্য দুই মৃতের পরিবারের তরফে এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

কিন্তু বিষয়টি নিয়ে তোপ দেগেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজ্য সরকারের তরফে মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসনের প্রতিক্রিয়া, “এত বড় একটা ঘটনা ঘটল। অথচ, ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক জিতেন্দ্র ও চৈতালি কোথায়? তাঁরা মৃতদের বাড়ি গিয়ে সমবেদনা জানানোর প্রয়োজন মনে করেননি।” তাঁরা ঘটনার পরে থেকেই মৃত ও জখমদের পরিবারের পাশে ছিলেন বলেও দাবি করেছেন ভি শিবদাসন। আসানসোল পুরসভার অন্যতম ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটকও দাবি করেন, “পুরসভা রাজ্য সরকারের কাছে মৃতদের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার জন্য আবেদন করে। সেই টাকা বৃহস্পতিবার দেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জিতেন্দ্র। জানিয়েছেন, যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই তাঁর পরিচিত। পরিবারেরই সদস্য। কিন্তু তাহলে মৃতদের বাড়ি যাননি কেন? জিতেন্দ্রের জবাব, “মৃতদের বাড়িতে যাওয়ার মতো অনুকূল পরিস্থিতি ছিল না। কিন্তু আমাদের নেতা-কর্মীরা সবসময় ওই তিনটি পরিবারের পাশে ছিলেন।” জিতেন্দ্রের বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দিলীপ দে-ও। তাঁর দাবি, “দুর্ঘটনার খবর পেয়েই আমাদের কর্মী ও সমর্থকেরা পরিবারগুলির পাশে দাঁড়িয়েছেন।”

এ দিকে, পুরো ঘটনাটি নিয়ে এ দিনও আসানসোলে দেখা গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। দিলীপের তোপ, “অত্যন্ত দুঃখজনক দুর্ঘটনাটি নিয়ে তৃণমূল নোংরা রাজনীতি করছেন।” জিতেন্দ্রও বলেন, “এটাকে নিয়ে জলঘোলা করা হচ্ছে। রাজনীতি করা হচ্ছে।” যদিও, শিবদাসনের প্রতিক্রিয়া, “বাজে কথা বলছেন বিজেপির নেতারা। মানুষের পাশে দাঁড়ানো যদি রাজনীতি হয়, আমরা সে রাজনীতিই করি।”

এ দিনই মৃত্যুর প্রতিবাদে শুক্রবার আসানসোলের বার্নপুর রোডে ধিক্কার মিছিলের আয়োজন করে তৃণমূল। ছিলেন দলের নেতা প্রবোধ রায়। তাঁর অভিযোগ, “ধর্মের নামে কম্বল বিতরণের কথা বলে এক ধরনের গণহত্যা করেছে বিজেপি!” সবটাই তৃণমূলের অপপ্রচার, দাবি বিজেপির অন্যতম রাজ্য নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়ের।

পাশাপাশি, এ দিন রামকৃষ্ণডাঙালে গিয়ে দেখা গিয়েছে, এলাকা অনেকটাই ছন্দে ফিরেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement