মারধরে জখম। নিজস্ব চিত্র।
বালি খাদানের দখল নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে জখম হলেন পাঁচ জন। বুধবার রাত থেকে কাঁকসার অজয়পল্লিতে শুরু হওয়া এই গোলমালের পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। আহতদের মধ্যে চার জনকে কাঁকসা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করানো হয়। এক জন ভর্তি রাজবাঁধের এক বেসরকারি হাসপাতালে। পুলিশ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১২ জনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত বুধবার রাত ১০টা নাগাদ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তৃণমূল কর্মী চিরঞ্জিৎ মজুমদার ও তাঁর অনুগামীরা অজয়ে বালি খাদান চালান। রাতে একটি অনুষ্ঠান দেখতে যাওয়ার সময় দুর্জয় মণ্ডল নামে আর এক তৃণমূল কর্মী ও তাঁর অনুগামীরা তাঁকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার সকালে চিরঞ্জিৎবাবুর অনুগামীরা দুর্জয়বাবু ও তাঁর লোকজনের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের সংঘর্ষে পাঁচ জন জখম হন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। চিরঞ্জিৎবাবুর চোট বেশি থাকায় তাঁকে রাজবাঁধের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে স্থানীয় বাসিন্দা অনিমেষ হাজরা বলেন, ‘‘দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। সবাই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকসা ব্লকে এ বার তৃণমূলের ভোট কমেছে কয়েক হাজার। তার পর থেকেই দোষারোপের পালা শুরু হয়েছে। এলাকার রাজনীতিতে চিরঞ্জিৎবাবুরা কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী হিসেবে পরিচিত। দুর্জয়বাবু ও তাঁর দলবল জেলা পরিষদ সদস্য দেবদাস বক্সীর ঘনিষ্ঠ। বালি খাদানের দখল নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কয়েক মাস আগেও এক বার সংঘর্ষ বেধেছিল। বিধানসভা ভোটে এলাকায় দলের ফল খারাপ হওয়ার পরে পরিস্থিতি আরও তেতেছে। দেবদাসবাবু অভিযোগ করেন, চিরঞ্জিৎবাবু ভোটের আগে সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করেছেন। স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা তার প্রতিবাদ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এর মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও ব্যাপার নেই।’’ পল্লববাবুর আবার দাবি, চিরঞ্জিৎবাবু দলের দীর্ঘদিনের কর্মী। সিপিএমের লোকজনের বাড়িতে হামলার ছকে না থাকতে চাওয়ায় তাঁকে মারধর করা হয়েছে। পল্লববাবু বলেন, ‘‘অশান্তি এড়াতে গিয়ে অশান্তির শিকার হয়েছেন চিরঞ্জিৎবাবু।’’
পুলিশ জানায়, আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।