প্রতীকী ছবি।
ভোটের ময়দানে এ বার কৃষকেরা মূল ভরসা, মনে করছে সব দলই। কৃষকদের কাছে টানতে বিজেপি নেতারা গ্রামে গিয়ে ‘কৃষক সুরক্ষা অভিযান’ শুরু করেছেন। এ বার কৃষকের ‘মন পেতে’ ঝাঁপাচ্ছে তৃণমূলও। বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা পূর্ব বর্ধমানে তিনটি বিধানসভা এলাকায় দলের দায়িত্বে থাকা নেতা অনুব্রত মণ্ডল স্থানীয় নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছেন, কৃষকদের বাড়ি গিয়ে তাঁদের সম্মানিত করতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষকদের আন্দোলনের পাশে ছিলেন, সে কথা তুলে ধরার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
অনুব্রতবাবু বলেন, ‘‘কেন্দ্রের নতুন কৃষি আইনের প্রথম থেকেই বিরোধিতা করেছেন আমাদের নেত্রী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গেও কথা বলেছেন, পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট ওই আইন স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আন্দোলনকারী কৃষকদের পাশে আমাদের এখানকার কৃষকেরাও ছিলেন। সে জন্য আমার এলাকার প্রতিটি ব্লকের নেতাদের বলেছি গ্রামে-গ্রামে কৃষকদের বাড়ি গিয়ে সম্মান জানাতে। দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) কৃষকদের পাশে ছিলেন, সে বার্তাও দিতে হবে।’’ অনুব্রতবাবু পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রাম বিধানসভা এলাকার দায়িত্বে রয়েছেন, যার বেশিরভাগ অংশই কৃষি-প্রধান বলে পরিচিত।
তৃণমূল সূত্রের দাবি, ব্লক বা পঞ্চায়েতের নিচু স্তরে কর্মীরা কৃষকদের সম্মানিত করার সঙ্গে কেন্দ্রের কৃষি আইন কতটা ‘বিপজ্জনক’, তা বোঝাবেন। সেই সঙ্গে এ রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে কৃষকদের স্বার্থে কী কী প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, সে সবও জানানো হবে। সেই সব প্রকল্পের সুবিধা কৃষকদের কাছে পৌঁছেছে কি না, তা জেনে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। অনুব্রতবাবু দাবি করেন, ‘‘কৃষকদের কষ্ট যে বিজেপি বোঝে না, তা প্রচার করতে হবে। কৃষিতে আমাদের রাজ্য যে এগিয়ে রয়েছে, সেটাও তুলে ধরতে হবে।’’
শুধু মাত্র ওই তিন বিধানসভা এলাকা নয়, পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে এই কর্মসূচি ছড়িয়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে বলে জানায় তৃণমূলের কৃষক ও খেতমজুর সংগঠন। সংগঠনের জেলা সভাপতি শেখ সাহানেওয়াজের কথায়, ‘‘জেলা কমিটির বৈঠক ডেকে পরিকল্পনা করা হবে। রোদে-জলে ভিজে যাঁরা আমাদের জন্য অন্ন জোগাড় করেন, সেই কৃষকদের সম্মানিত করতে চাই।’’
বিজেপির রাঢ়বঙ্গের পর্যবেক্ষক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘তৃণমূল কৃষকদের নয়, ফড়েদের পক্ষে। সারা জীবন যাঁদের অসম্মান করল, ভোটের সময়ে তাঁদের কথা মনে পড়েছে ওদের। কৃষকেরা এর জবাব দেবেন।’’ সিপিএমের কৃষকসভার রাজ্য কমিটির সদস্য উদয় সরকারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘তৃণমূল ও বিজেপির কর্মসূচি একই। তাই যেটাকে জয় বলে দেখাতে চাইছে তৃণমূল, সেটা অচিরেই পরাজয়ে পরিণত হবে। আমরা কৃষি আইন বাতিলের দাবি তুলছি।’’