বাঁ দিক থেকে রানিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী এসএস আলুয়ালিয়া এবং আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পরিষদের নতুন চেয়ারম্যান কবি দত্ত। —ফাইল চিত্র।
তিনি তৃণমূলের বিধায়ক। আবার সম্পর্কে আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়ার শ্যালকও। এর পাশাপাশি রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও একটি পরিচয় ছিল। তিনি ছিলেন আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। শুক্রবার তাঁকে সেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল।
রাজ্য সরকারের নগরায়ন দফতর একটি নোটিস দিয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, আপাতত তাপসের ছেড়ে যাওয়া পদে বসবেন আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কবি দত্ত।
দত্ত আসানসোল দুর্গাপুরের বড় ব্যবসায়ী। হোটেল থেকে শুরু করে আরও অনেক ব্যবসা রয়েছে তাঁর। কিন্তু রানিগঞ্জের বিধায়ককে পদ থেকে সরিয়ে তাঁকে কেন আনা হল তাঁর কারণ খুঁজতে গিয়ে নানা তত্ত্বের কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে।
লোকসভা ভোটে আসানসোলে জিতেছে তৃণমূল। বিজেপি প্রার্থী অহলুওয়ালিয়াকে হারিয়ে তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্হা জিতেছিলেন বড় ব্যবধানে। এমনকি, তাপসের বিধানসভা ক্ষেত্র রানিগঞ্জেও ভাল ফল করেছে তৃণমূল। তার পরেও তাপসকে তাঁর পদ থেকে অপসারণ করা হল কেন? তার ব্যাখ্যা খুঁজতে অনেকেই মনে করছেন, তাপসের বিধানসভা রানিগঞ্জে ভাল ফল হলেও আসানসোল উত্তর ও আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভায় সে ভাবে তৃণমূল কংগ্রেস ভাল ফল করতে পারেনি। হয়তো সে জন্যই আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পরিষদের দায়িত্বে থাকা তাপসের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
আবার আসানসোলের রাজনৈতিক মহলে এই খবরও ছড়িয়েছে যে, আসানসোল উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কম ভোটে জয়লাভ করায় এখানকার বিধায়ক মলয় ঘটককে ভর্ৎসনা করেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাপসকে সরানোর সিদ্ধান্তে তাই আসানসোলের রাজনৈতিক মহলে একটিই প্রশ্ন ঘুরে ফিরে আসছে। তা হল, ‘কে কার রোষে পড়ল?’
এ ব্যাপারে তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘এ রকম কোনও সার্কুলারের কথা আমার জানা নেই। আমি একটু অসুস্থ। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
অন্য দিকে, বিজেপির পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সৎ লোকের কোনও জায়গা নেই তৃণমূলে। নিজের বিধানসভায় লড়াই করে আমাদের অর্থাৎ বিজেপিকে চার হাজারের উপর ভোটে রানিগঞ্জ বিধানসভা থেকে হারিয়েছেন। তারই পুরস্কার তিনি পেলেন। আসলে সামনে দুর্গাপুর পুরসভার ভোট। সেই জন্য সম্ভবত ব্যবসায়ী কবি দত্তকে চেয়ারম্যান করা হল।’’