সিপিএমের দফতরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর। — নিজস্ব চিত্র।
স্বাধীনতা দিবসে সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে জাতীয় পতাকা তুললেন তৃণমূল বিধায়ক। সোমবার এই বেনজির ছবি দেখা গেল আসানসোলের পাণ্ডবেশ্বরে। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন সিপিএমের নবগ্রাম শাখার দফতরে।
সোমবার স্বাধীনতা দিবসের সকালে সিপিএমের নবগ্রাম শাখার দফতরের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ সিপিএম কর্মী-সমর্থকরা বিধায়কের গাড়ি দাঁড় করিয়ে তাঁকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে অনুরোধ করেন। সিপিএম কর্মীদের সেই অনুরোধে সাড়া দেন তৃণমূল বিধায়ক। তিনি সিপিএমের দলীয় দফতরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এর পর নরেন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘যাঁরা এখানে সিপিএম করেন তাঁরা আমার ছোট ভাই। পতাকা তোলা হয়নি, তাই তাঁরা দাঁড়িয়েছিলেন। আমাকে ডাকলেন ওঁরা। আমি এসে পতাকা তুললাম। আজ স্বাধীনতা দিবস। আজ কোনও রাজনৈতিক ভেদাভেদ নেই। আমরা সকলে ভারতবাসী। এটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিক্ষা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক সময় চুলের মুঠি ধরে মহাকরণ থেকে বার করে দেওয়া হয়েছিল। আবার সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর বাম নেতাদের ফিশ ফ্রাই খাইয়ে আপ্যায়িত করেছিলেন।’’
সিপিএমের নেতৃত্বাধীন বাম সরকারকে সরিয়েই ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। সম্প্রতি ইডির হাতে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের গ্রেফতার এবং সিবিআইয়ের হাতে অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতার নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নিয়ম করে তোপ দাগছে সিপিএম। এই আবহে পাণ্ডবেশ্বরে সিপিএমের দলীয় দফতরে তৃণমূল বিধায়কের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার ছবি বেনজির। তৃণমূল বিধায়কের পতাকা উত্তোলনের সময় দলীয় দফতরে উপস্থিত থাকা সিপিএমের নবগ্রাম শাখার সম্পাদক নেতা হাবিবুল শেখ এ নিয়ে যুক্তি দিচ্ছেন, ‘‘আজ একটি আলাদা দিন। বিধায়ক জাতীয় পতাকা তুলেছেন। সে জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আজকের দিনে কোনও রাজনীতি নয়।’’
এর মধ্যে দোষের কিছু দেখছেন না সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলার সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এটা গ্রামের রাজনীতি। সকলে মিলেমিশে থাকেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করাটা কোনও ভুল নয়। এটা অপরাধ নয়। উনি সকলের বিধায়ক।’’