এমন বাড়ি থাকার পরেও তৃণমূল নেতার মায়ের নাম আবাস যোজনার তালিকায়! বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।
দোতলা বাড়িটি নতুন। তবুও আবাস যোজনার তালিকায় তৃণমূল নেতার মায়ের নাম। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা পূর্ব বর্ধমানের মেমারি ১ নম্বর ব্লকের দুর্গাপুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, সম্প্রতি দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নতুন করে আবাস যোজনার সমীক্ষার পর এই ‘দুর্নীতি’ সামনে এসেছে। নতুন তালিকায় প্রকৃত উপভোক্তাদের নাম বাদ গেলেও কী ভাবে দোতলা পাকা বাড়ির মালিক তৃণমূল নেতা অভিজিৎ ভট্টাচার্যের মা অনুপমা ভট্টাচার্যের নাম এল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দা শেখ নাসিরের কথায়, ‘‘কাঁচা বাড়িকে পাকা বাড়ি দেখিয়ে পরিকল্পিত ভাবে তালিকা থেকে একাধিক উপভোক্তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।’’ একই অভিযোগ করেন আর এক স্থানীয় বাসিন্দা আজমিরা বিবি। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মাটির বাড়ি। অথচ তালিকায় নাম নেই!’’
যদিও স্বজনপোষণের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতা। তিনি আঙুল তুলেছেন সমীক্ষা করতে আসা আধিকারিক এবং কর্মীদের বিরুদ্ধে। অভিজিতের কথায়, ‘‘যাঁরা সমীক্ষা করতে এসেছিলেন, তাঁরা সঠিক ভাবে কাজ করেননি। তারই ফলস্বরূপ আবাস যোজনার তালিকায় আমার মায়ের নাম রেখে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে মহকুমা শাসকের কাছে ই-মেল মারফত ওই তালিকা থেকে মায়ের নাম বাদ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘কেউ কেউ আবাস যোজনার তালিকায় আমাদের নাম রেখে সম্মানহানি করার চেষ্টা করছেন।’’
অভিজিতের মা অনুপমা বলেন, ‘‘সমীক্ষার সময় কেউ আমাদের বাড়িতে আসেননি। পরিকল্পিত ভাবে আবাস যোজনার তালিকায় আমার নাম রেখে সম্মানহানির চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার দোতলা বাড়ি আছে। সরকারি সাহায্যে বাড়ি তৈরি করার প্রয়োজন নেই।’’
এ নিয়ে মেমারি ১ নম্বর ব্লকের বিডিও আলি মহম্মদ ওয়ালিউল্লাহ বলেন, ‘‘সমীক্ষার প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি। দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সমীক্ষার কাজ শেষের দিকে। ওই এলাকা থেকে একাধিক অভিযোগ এসেছে। সেই মতো এখনও বেশ কয়েকটি পর্যায়ে সমীক্ষা করার পর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। তবে সঠিক ভাবে সার্ভে হয়নি বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন।’’
যদিও এই বিষয়ে কটাক্ষের সুযোগ হাতছাড়া করেনি বিরোধীরা। জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘‘এখন চুরি ধরা পড়ে গিয়েছে বলে নাম বাদ দেওয়ার কথা বলছেন। আসলে তৃণমূল নেতাদের সবাই চোর। এটা আরও এক বার প্রমাণিত হল।’’